হাদির ওপর গুলির ঘটনায় বাইকের মালিক বললেন, ‘শোরুমে নিয়ে গেলে সত্য বেরিয়ে আসবে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৭ PM
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নান আদালতে দাবি করেছেন, তিনি ওই মোটরসাইকেল আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি প্রমাণের জন্য র্যাব ও পুলিশকে তাঁকে শোরুমে (বিক্রয়কেন্দ্র) নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানান তিনি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে সেখানে নেয়নি বলে অভিযোগ করেন হান্নান।
গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। তিনি মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ শেষে ফিরছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা এখনো সংকটজনক।
এ ঘটনায় এখনো মূল হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে হামলাকারীরা ঘটনাস্থলে এসেছিল, সেই মোটরসাইকেলের মালিক হিসেবে শনাক্ত হওয়া মো. আব্দুল হান্নানকে শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক করে র্যাব।
পরে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পল্টন থানার উপপরিদর্শক সামিম হাসান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলম এই আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত হোন্ডা মোটরসাইকেলের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। নেমপ্লেটের সূত্র ধরে মালিকানা যাচাই করে তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ বাহিনী আব্দুল হান্নানের নাম পায়। হামলাকারীদের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মালিকের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা যাচাই করতেই রিমান্ড প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ‘সারা জাতি আজ উদ্বিগ্ন। সামনে নির্বাচন। এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এ হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্ঘাটন করা দেশের ভবিষ্যৎ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
শুনানির একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আব্দুল হান্নান বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর আমি র্যাবকে বলেছিলাম, শোরুমে নিয়ে গেলে সত্য বেরিয়ে আসবে। থানায় গিয়েও পুলিশকে একই কথা বলেছি। কিন্তু কেউ আমাকে শোরুমে নিয়ে যায়নি।’
তিনি আরও জানান, ‘আমি বাইকটি মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছিলাম। পরে হাতে সমস্যা হওয়ায় পরিবার বাইক চালাতে নিষেধ করে। বাইকটি নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে একটি শোরুমে বিক্রি করি। মালিকানা পরিবর্তনের কথা ছিল। শোরুম থেকে দুই মাস আগে ফোন দিয়েছিল, কিন্তু অসুস্থ থাকায় যেতে পারিনি।’
আদালতে আব্দুল হান্নানের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।