ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ আরও ১৬ জেলায়, বিদ্যমান প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ

দেশের ১৬ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
দেশের ১৬ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার  © সংগৃহীত

দেশের শিক্ষিত যুব নারী ও পুরুষদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া মিলছে। বর্তমানে দেশের ৪৮ জেলায় ফ্যিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ চলছে। সরকার ৬৪ জেলায় তা ছড়িয়ে দিতে বাকি ১৬ জেলায় একই ধরনের প্রশিক্ষণ দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে। মূল প্রকল্পের ব্যয় ৩০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ১৬ জেলা যুক্ত হলে ব্যয় ৭৫ কোটি টাকা বাড়বে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন দেশের ৪৮ জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি শীর্ষক চলমান প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এটি সংশোধন করে এর মেয়াদ এক বছর অর্থাৎ ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০০ কোটি টাকা।  

বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা ডিপিপি সংশোধনের জন্য গত ১১ মার্চ প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) একটি বৈঠক হয়। এরপর ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কমিটির (পিআইসি) বৈঠক।

উভয় বৈঠকের পরে ২২ মে পিএসসির আরেক বৈঠকে প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। কার্যবিবরণীতে বলা হয়, বৈঠকে প্রকল্প পরিচালক জানান, মাঠপর্যায়ে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং প্রশিক্ষণ শেষে তারা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। সে জন্য প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে উপস্থিত সবাই এটিকে সারা দেশে চালু করার পক্ষে মত দেন।

আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে আইটি প্রশিক্ষণ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউতে, থাকছে কর্মসংস্থানের সুযোগ

পিএসসির বৈঠকে আরও জানানো হয়, যারা ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই আয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন। প্রকল্পের সফলতা এবং মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণের ব্যাপক চাহিদা ও জনপ্রিয়তা থাকায় পিআইসির বৈঠকে এটিকে সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো. সাইফুজ্জামান ২৪ মে যুব ও ক্রীড়াসচিব মো. মাহবুব-উল-আলমকে পাঠানো এক চিঠিতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। তিনি আরও জানান, মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে প্রকল্পের ব্যয় ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৭৫ কোটি টাকায়।

যুব ও ক্রীড়াসচিব মো. মাহবুব-উল-আলম ২৭ জুলাই তার কার্যালয়ে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে ৪৮ জেলার বাইরে থাকা বাকি ১৬ জেলায়ও অনেকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। শিগগির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে চলমান প্রকল্পের ৩০০ কোটি টাকার কাজ পেয়েছে। দেশের ৪৮ জেলায় মোট ২৮ হাজার ৮০০ যুব নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা এই প্রকল্পের আওতায়। এখনো বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ চলছে। দৈনিক নগদ ভাতা দেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা করে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে তিন বেলায় ৩০০ টাকার খাবার দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জেনে রাখুন বিশ্বসেরা ২৯ স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ১৬ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও পেয়েছিল। প্রশিক্ষণের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যারা এ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাদের ৬৪ শতাংশই অর্থ উপার্জন করছেন আর ২১ শতাংশ চাকরি করছেন।

জানা গেছে, প্রশিক্ষণ দিতে প্রতিটি জেলায় ২৫টি কম্পিউটার ও হাইস্পিড ইন্টারনেট-সংবলিত দুটি ল্যাব স্থাপন করেছে ই-লার্নিং। প্রতিটি ল্যাবে ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক, বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর।

ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৬ জেলা এখন প্রশিক্ষণের বাইরে। জেলাগুলো হলো ঢাকা, গাজীপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ি, শেরপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ভোলা, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, নড়াইল, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর। এসব জেলার জেলা প্রশাসকদের অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা বলেছেন যে প্রশিক্ষণের বাইরে থাকায় তাদের জেলা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। আমাদের বক্তব্য হল, এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার সিদ্ধান্ত নিলেই প্রশিক্ষণ শুরু করা যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ