আবিপ্রবিতে স্থায়ী রূপ পেলো বাংলাদেশের প্রথম ‘জুলাই-স্তম্ভ’
- সৈয়দ জুল আর্শিল, আবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:৩৪ PM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩০ AM
গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সারাদেশজুড়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যা ও দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরাও সরব ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আবিপ্রবিতে আন্দোলনের প্রথম ঢেউ তৈরি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশি ধরপাকড়ে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বুটেক্স ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আগের চেয়ে আরও তীব্র আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

পরবর্তীতে মহাখালী, নিকেতন, মধুবাগ ও মহানগর এলাকায় গণহারে ধর-পাকড় শুরু করে পুলিশ ও র্যাব। যেকারণে আবিপ্রবি ও পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মেস ও হলে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ বাসস্থানে বাস করাও অনিরাপদ হয়ে যায়। তবে এতো ধরপাকড়ের মধ্যেও অনেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে গিয়ে আন্দোলন শুরু করে। সেই সাথে আবিপ্রবির ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিতেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি অঙ্কণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। যার মধ্যে অন্যতম ছিলো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে প্রথম ‘জুলাই-স্তম্ভ’ নির্মাণ।
.jpg)
গতবছরের ৩ আগস্ট সকালেই আবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা নিজ অর্থায়নেই একটি অস্থায়ী জুলাই-স্তম্ভ নির্মাণ করা শুরু করে এবং দুপুরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। উক্ত জুলাই স্তম্ভের প্রস্তাবক ছিলেন হাসনাত আবীর অঙ্গন এবং নকশা করেন আবিপ্রবির তৎকালীন শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম তন্ময়। সেদিন জুলাই-স্তম্ভটি নির্মাণে অংশগ্রহণ করেন, মো. আরাফাত রেজা, মো. হৃদয় কুরেশি,অমিত শিকদার,রিশতা জামান,তাহমিনা হোসেন মাইশা সহ আরো অনেকে।

এবছর জুলাই মাসের শুরুতে এই ঐতিহাসিক জুলাই-স্তম্ভকে স্থায়ী করারর দাবি ওঠায় আবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেই দাবিকে মাথায় রেখে এই জুলাই-স্তম্ভকে স্থায়ী রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আবিপ্রবি প্রশাসন। যার পুনঃউদ্বোধন সম্পন্ন হয় ০৪ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল হক, উপাচার্য -আবিপ্রবি। প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, উপ-উপাচার্য -আবিপ্রবি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সকল ডিপার্টমেন্ট প্রধান, সকল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীরা। এবার এটিকে স্থায়ী রূপ দাঁড় করতে কাজ করেছেন আবিপ্রবির আহনাফ আহমেদ হাবীব, সাজ্জাদুল হক, মাহবুবুর রহমান সিহাব, হুমায়রা আদিবা, জুবায়দা রহমান তারিনসহ আরো কিছু শিক্ষার্থী।
জুলাই-স্তম্ভ” শুধু একটি নির্মাণ নয়, এটি এক ঐতিহাসিক চেতনার প্রতীক। আবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের চোখে এই স্তম্ভ হয়ে উঠেছে সাহস, ঐক্য, ও সংগ্রামের স্মারক। প্রতিবাদের সেই রক্তাক্ত জুলাইকে স্মরণ করে, আবিপ্রবি ছাত্রসমাজ আজও উচ্চারণ করে: ‘জুলাই মানে প্রতিরোধ, জুলাই মানে মুক্তির শপথ।’