হেপাটাইটিস ‘ডি’-কে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৯ PM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৯ PM
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে বিশ্বজুড়ে সরকার ও অংশীদারদের কাছে ভাইরাল হেপাটাইটিস নির্মূলের জন্য দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, হেপাটাইটিস ডি ভাইরাসকে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের সমতুল্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ডা. টেডরস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘প্রতি ৩০ সেকেন্ডে কেউ না কেউ হেপাটাইটিস বা যকৃত ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে, অথচ আমরা এই রোগ রোধের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও প্রতিরোধের ব্যবস্থা জানি। এখন সময় এসেছে দ্রুত কাজ করার।’
বিশ্বে ৩০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ হেপাটাইটিস বি, সি, ও ডি ভাইরাসে আক্রান্ত এবং বছরে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ এই রোগজনিত যকৃত সিরোসিস ও ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। হেপাটাইটিস ডি ভাইরাস শুধু হেপাটাইটিস বি আক্রান্তদের মধ্যে হয় এবং এটি যকৃত ক্যান্সারের ঝুঁকি ২ থেকে ৬ গুণ বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বর্তমানে হেপাটাইটিস সি মুখে খাওয়ার ওষুধে মাত্র ২-৩ মাসে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব এবং হেপাটাইটিস বি নিয়ন্ত্রণে জীবনব্যাপী চিকিৎসা পাওয়া যায়। তবে হেপাটাইটিস ডির চিকিৎসা এখনো উন্নয়নের ধাপে রয়েছে। এই জন্য দ্রুত পরীক্ষা, প্রতিরোধ, ও চিকিৎসা ব্যবস্থা জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের জুলাই মাসের বেতন নিয়ে সুখবর দিল মাউশি
গত কয়েক বছরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হেপাটাইটিস মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৫ সালে জাতীয় হেপাটাইটিস কর্মপরিকল্পনা গ্রহণকারী দেশ বেড়ে ১২৩-এ পৌঁছেছে। গর্ভবতী মহিলাদের হেপাটাইটিস বি পরীক্ষা করার নীতিও বেশি দেশে চালু হয়েছে এবং ১৪৭ দেশে জন্মকালীন হেপাটাইটিস বি টিকা প্রদান শুরু হয়েছে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাপ্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে মাত্র ১৩% হেপাটাইটিস বি এবং ৩৬% হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে, আর চিকিৎসার হার অনেক কম— মাত্র ৩% হেপাটাইটিস বি ও ২০% হেপাটাইটিস সি আক্রান্তের চিকিৎসা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করলে ২.৮ মিলিয়ন জীবন বাঁচানো যাবে এবং ৯.৮ মিলিয়ন নতুন সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এজন্য দেশগুলোর উচিত অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সেবা সংযুক্তি, সাশ্রয়ী ওষুধ, তথ্য উন্নয়ন ও সামাজিক কলঙ্ক দূরীকরণে গুরুত্ব দেওয়া।