বাড়ছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার, নির্মূলের লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী বলছে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৪:১৪ PM , আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৯ AM
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, জরায়ুমুখ ক্যান্সার নারীদের মধ্যে চতুর্থ সর্বাধিক মৃত্যুর কারণ হলেও, সঠিক সময়ে টিকা, স্ক্রিনিং ও চিকিৎসার মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার পাশাপাশি ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি নারী এই রোগে প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানব প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) সংক্রমণই মূল কারণ, যা প্রায় সব যৌনসঙ্গত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এইচআইভি আক্রান্ত নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় ছয় গুণ বেশি। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০৩০ সালের মধ্যে এই রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেছে–১৫ বছর বয়সের মধ্যে ৯০ শতাংশ মেয়েকে এইচপিভি টিকা প্রদান, ৩৫ ও ৪৫ বছর বয়সে ৭০ শতাংশ নারীর নিয়মিত স্ক্রিনিং নিশ্চিত করা, ৯০ শতাংশ রোগীর যথাসময়ে চিকিৎসা প্রদান নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: আমার সন্তান মুহাম্মদ এখন কেবলই হাড়ের কাঠামো
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রি-ক্যান্সার অবস্থায় নিয়মিত স্ক্রিনিং ও চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বিশেষ করে, এইচপিভি টিকা ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সের মেয়েদের দেওয়া অত্যন্ত কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এর পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ, কন্ডোম ব্যবহার এবং স্বেচ্ছায় পুরুষের খোসা ছাড়ানোর মতো পদ্ধতিও এইচপিভি সংক্রমণ কমাতে সহায়ক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে স্ক্রীনিং বৃদ্ধি পেলে অধিক সংখ্যক রোগী চিহ্নিত হবে, যা দ্রুত চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করবে। এর ফলে, আগামী কয়েক দশকে লক্ষ লক্ষ নারী ও শিশুর জীবন রক্ষা পাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের নতুন ঘটনা প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ৪-এর নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে ২১২০ সাল পর্যন্ত ৭ কোটি ৪০ লাখ ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ এবং ৬ কোটি ২০ লাখ মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
দেশগুলোকে স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিত করতে এবং সচেতনতা বাড়াতে এই সময়সীমার মধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিতে বলা হয়েছে। জরায়ুমুখ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি বিশ্বব্যাপী নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের সূচনা হতে যাচ্ছে।