শুধু মাথায় নয়, পেটেও হতে পারে মাইগ্রেন—জানুন লক্ষণ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৭ PM , আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৭ PM
আমাদের মনে মাইগ্রেন মানেই তীব্র মাথাব্যথা। টানা দুই-তিন দিন মাথা ঘোরা ও অসহ্য যন্ত্রণা; এটাই সাধারণত পরিচিত। কিন্তু অনেকেই জানেন না, মাইগ্রেন শুধু মাথায় নয়, পেটেও হতে পারে। এ ধরনের মাইগ্রেনকে বলা হয় অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন। এতে নাভির আশপাশে ব্যথা, বমি ভাব, গা ঘোরানো এবং অস্বাভাবিক ক্লান্তি দেখা দেয়।
এ ধরনের মাইগ্রেন শিশুদের মধ্যে বেশি হলেও প্রাপ্তবয়স্করাও আক্রান্ত হতে পারেন। অনেক সময় সাধারণ পেটব্যথা ভেবে অনেকে বিষয়টি গুরুত্ব দেন না, কিন্তু উপেক্ষা করলে এটি দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করতে পারে।
অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন কী?
অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন হলো একটি স্নায়বিক সমস্যা, যেখানে মাথায় কোনো ব্যথা না থাকলেও পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। স্নায়ুতন্ত্রে রাসায়নিক পরিবর্তন এবং পেটের রক্তনালির সঙ্কোচন-প্রসারণের কারণে নাভির চারপাশে ব্যথা শুরু হয়। এই ব্যথা ধীরে ধীরে পেটের ওপরের অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। এর সঙ্গে দেখা দিতে পারে—পেট ফাঁপা, ক্ষুধামন্দা, বমি ভাব ও মাথা ঘোরা।
এই ব্যথা সাধারণত ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে এবং সময় সময় ফিরে আসে। অনেক সময় হজমের সমস্যা ভেবে এটিকে উপেক্ষা করা হয়, ফলে চিকিৎসা শুরুতেই দেরি হয়ে যায়।
যদি পেটে ব্যথা ৭২ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়, নাভির চারপাশে তীব্র চাপ অনুভূত হয় এবং বমি ভাব থাকে—তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। চিকিৎসায় সাধারণত ব্যথানাশক, বমিরোধক ও প্রয়োজনে মাইগ্রেনের বিশেষ ওষুধ (যেমন ট্রিপটানস) ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কেন হয় অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন?
অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেনের অন্যতম প্রধান কারণ হলো বংশগত প্রভাব। পরিবারে কারও এই সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও এ ধরনের মাইগ্রেনের ট্রিগার হতে পারে।
যেভাবে সতর্ক থাকবেন
*অতিরিক্ত ঝাল-মশলাযুক্ত বা বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।
*ক্যাফেইন সীমিত করুন—কফি, চকোলেট ও কোমল পানীয় কমিয়ে দিন।
*নিয়মিত শরীরচর্চা করুন; যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন বিশেষভাবে উপকারী।
*কোন খাবারে ব্যথা বাড়ে—চকলেট, পনির, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি—সেগুলো চিহ্নিত করে খাবার তালিকা থেকে বাদ দিন।
*মানসিক চাপ কমাতে মাইন্ডফুলনেস বা ধ্যানচর্চা করুন।
সূত্র: আমেরিকান ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন, মায়ো ক্লিনিক, আমেরিকান মাইগ্রেন ফাউন্ডেশন।