বয়সের আগেই বার্ধক্য ডেকে আনে যেসব অভ্যাস
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ AM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ AM
বয়স তো কেবল সংখ্যা মাত্র এই কথাটি অনেক সময় সান্ত্বনা মনে হয়। কিন্তু শরীর ও ত্বকের বার্ধক্য যে বাস্তব, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কেউ কেউ ৪০ বছর বয়সেও তরুণ দেখান, আবার কেউ ৩০ এ পৌঁছাতেই বলিরেখা, ক্লান্ত মুখ, চুল পাকা বা ত্বকের প্রাণহীনতা অনুভব করেন। বিজ্ঞান বলছে, বয়সের আগেই বার্ধক্য ধরা দেয় মূলত কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসের কারণে। নিচে জানুন সেই অভ্যাসগুলো, যা অজান্তেই আপনাকে দ্রুত বুড়িয়ে দিচ্ছে-
ঘুমের অভাব
নিয়মিত ঘুম কম হলে শরীরে ‘কর্টিসল’ নামের মানসিক চাপের হরমোন বেড়ে যায়। এটি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়, ফলে ত্বক ঝুলে পড়ে ও বলিরেখা দেখা দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম শরীর ও ত্বক দুইয়ের জন্যই জরুরি।
অতিরিক্ত রোদে থাকা
রোদের অতিবেগুনি (UV) রশ্মি ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট করে ও কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয়, যার ফলাফল আগাম বলিরেখা ও দাগ। নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে এই ক্ষতি অনেকটাই ঠেকানো যায়।
ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন
তামাক ও অ্যালকোহল শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয়, রক্তনালী সংকুচিত করে এবং কোষের পুনর্গঠন বাধাগ্রস্ত করে। ফলে ত্বক দ্রুত নিস্তেজ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোও দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া
পানি শরীরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান। পানি কম খেলে ত্বক শুকিয়ে যায়, রক্তে টক্সিন জমে এবং কোষের পুনরুৎপাদন ব্যাহত হয়। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করলে শরীর ও ত্বক দুই-ই সতেজ থাকে।
চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া
অতিরিক্ত চিনি শরীরে ‘গ্লাইকেশন’ নামের প্রক্রিয়ায় প্রোটিন নষ্ট করে দেয়, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়। আবার ফাস্ট ফুড ও প্রসেসড খাবারে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ও সোডিয়াম কোষে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা বয়স বাড়িয়ে দেয়।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়, যা ত্বক, চুল ও মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিয়মিত মেডিটেশন, বই পড়া বা হাঁটার মতো কার্যকলাপ মানসিক প্রশান্তি এনে বার্ধক্য বিলম্বিত করতে পারে।
শরীরচর্চার অভাব
অলস জীবনযাপন রক্তসঞ্চালন কমিয়ে দেয়, ফলে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এতে ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়ে ও মাংসপেশি ঢিলে হয়ে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটলেও শরীর সক্রিয় থাকে এবং তারুণ্য ধরে রাখা সম্ভব।
রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার
ব্লু লাইট চোখ ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এটি ঘুমের চক্র নষ্ট করে এবং ত্বকের কোষে অক্সিডেটিভ ক্ষতি ঘটায়। ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে স্ক্রিন বন্ধ রাখার অভ্যাস বয়সের ছাপ বিলম্বিত করে।
বয়সকে থামানো সম্ভব নয়, তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সচেতন অভ্যাস গড়ে তুললে বয়সের প্রভাব অনেকটা ধীর করা যায়। পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক প্রশান্তিই হতে পারে তরুণ থাকার সবচেয়ে সহজ সূত্র।