দিনে ঝিমুনি, রাতে ঘুম আসে না, লিভারের যে রোগের সংকেত
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৭ AM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৭ AM
সারাদিন ধরে অকারণ ক্লান্তি, ঝিমুনি কিংবা রাতে ঘুমের ঘাটতি—এই সমস্যাগুলোর পেছনে অনেকেই অনিদ্রা বা মানসিক চাপকে দায়ী করেন। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, এসব উপসর্গ হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। কারণ এগুলো হতে পারে লিভারের জটিল এক রোগের পূর্বাভাস, যার নাম হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি (Hepatic Encephalopathy)। এই রোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। ফলে প্রাথমিক উপসর্গগুলোকে উপেক্ষা করা হয়, চিকিৎসা শুরু হয় অনেক দেরিতে। অথচ সময়মতো শনাক্ত করা গেলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি কী?
লিভারে টক্সিন জমতে থাকলে তখন লিভারের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই টক্সিন যদি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে না পারে এবং পরতে পরতে জমা হতে থাকে, সে ক্ষেত্রে তা রক্তস্রোতে বাহিত হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কোষগুলিরও ক্ষতি করে। ফলে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি সাধারণত সেই সব ব্যক্তিদের হয়, যাঁদের যকৃতের গুরুতর রোগ আছে। যেমন কারও যদি ফ্যাটি লিভার দীর্ঘ সময় ধরে থাকে অথবা লিভার সিরোসিস থাকে, তা হলে এনসেফ্যালোপ্যাথির ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার বারে বারে জন্ডিস হয়েছে বা হেপাটাইটিস বি অথবা সি-এর সংক্রমণ ঘটেছে, তাঁরাও ঝুঁকিতে থাকবেন।
লক্ষণ কী কী?
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি হলে হরমোনের গোলমালও হয়। ঘুমের জন্য দায়ী যে হরমোন মেলাটোনিন, তার ক্ষরণে তারতম্য ঘটে। ফলে ক্লান্তি ভাব, ঝিমুনি বেড়ে যায়। দিনের বেলায় ক্লান্তি আসে, কিন্তু রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। পাশাপাশি, শরীরের তাপমাত্রাও ওঠানামা করে, প্রদাহ অনেক বেড়ে যায়।
এই রোগের কারণে স্নায়বিক সমস্যাও দেখা দেয়। লিভারে জমা টক্সিন রক্তস্রোতে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছয়, ফলে বিভ্রান্তি, মনোযোগের অভাব ও সাময়িক স্মৃতিনাশ হতে পারে। মুঠো মুঠো ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ বেশি খেলে এবং রাতের পর রাত জাগলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।