২৩ বছরেই হার্ট অ্যাটাক! নেপথ্যে ৬ কারণ, তরুণদের জন্য সতর্কবার্তা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:০২ PM , আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৯ PM
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ভর্তি হওয়া। চিকিৎসকরা বলছেন, অল্প বয়সে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। অনেক সময় ২২-২৩ বছরের তরুণও গুরুতর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট নিয়ে আসছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
সম্প্রতি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মাত্র ২৩ বছরের এক ছাত্রকে ভর্তি করা হয় বুকে ব্যথা নিয়ে। পরীক্ষা করে ধরা পড়ে, সে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত। তার মা–বাবা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না—এত কম বয়সে এমন মারাত্মক অসুস্থতা!
কেন বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
চিকিৎসকদের মতে, হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। এর মধ্যে রয়েছে:
ধূমপান ও মাদকাসক্তি
তরুণদের মধ্যে ধূমপান ও কোকেন, ইয়াবা বা গাঁজার মতো মাদকের ব্যবহার বাড়ছে। এগুলো সরাসরি হৃদ্যন্ত্রের রক্তনালির ক্ষতি করে।
ঘুমের অভাব
স্মার্টফোনে দীর্ঘসময় স্ক্রলিং, রাত জাগা এবং মানসিক চাপে ঘুমের সমস্যা হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার ও জাংকফুড
অতিরিক্ত চর্বি, লবণ ও চিনিযুক্ত ফাস্ট ফুডে অল্প বয়স থেকেই রক্তনালিতে চর্বি জমে।
অলস জীবনযাপন ও শরীরচর্চার অভাব
পর্যাপ্ত শারীরিক কার্যক্রম না থাকলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও ওবেসিটির ঝুঁকি বাড়ে।
মানসিক চাপ
অব্যাহত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হৃদরোগের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।
বংশগত কারণও গুরুত্বপূর্ণ
চিকিৎসকরা বলছেন, পরিবারে যদি বাবা, চাচা বা বড় ভাইয়ের হৃদরোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে কম বয়সেও এই ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই পারিবারিক ইতিহাস জানা ও নিয়মিত চেকআপ করাও অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: ভিটামিনের অভাব ওষুধ খেয়ে মেটাচ্ছেন? লাভের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে বেশি
প্রতিরোধে করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, অল্প বয়স থেকেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি। ফলে যেসব সতর্কতা মেনে চলতে হবে:
—ধূমপান ও মাদক পরিহার
—নিয়মিত শরীরচর্চা
—পর্যাপ্ত ঘুম
—ফলমূল, শাকসবজি ও মাছ নির্ভর স্বাস্থ্যকর খাবার
—চর্বিযুক্ত মাংস ও জাংকফুড থেকে দূরে থাকা
—মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন ও সময়মতো বিশ্রাম
হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভয় না পেয়ে বরং সচেতন হওয়াই এখন সবচেয়ে জরুরি। সময় থাকতেই যদি জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায়, তাহলে হৃদ্রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। তরুণ প্রজন্মকে এখন থেকেই হৃদ্যন্ত্রের যত্ন নিতে হবে—এই বার্তাই দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।