ভারতীয় দূতাবাসসংলগ্ন সড়কের নাম ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’, উদ্বোধন হলো আজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:২৬ PM
রাজধানীর গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত ভারতীয় দূতাবাসসংলগ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’। সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মরণে সড়কটির নামফলক উদ্বোধন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশান-২ গোলচত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নামফলক উন্মোচন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। আমাদের বোন ফেলানী কাটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় জীবন দিয়েছিল। তার সঙ্গে কী ধরনের নৃশংসতা করা হয়েছিল, সেটি প্রতিদিন মনে করিয়ে দিতেই এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একই সঙ্গে আমরা বিশ্বের বিবেকের কাছে তুলে ধরতে চাই—বাংলাদেশের সীমান্তে এখনো সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সে কারণেই বিজয় দিবসে ফেলানীর নামে এই সড়কের উদ্বোধন করা হলো।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ‘ফেলানী হত্যাকাণ্ড নিছক একটি হত্যার ঘটনা নয়; এটি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই সড়ক প্রতিদিন সেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাটি স্মরণ করিয়ে দেবে।’
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ফেলানীর নামে এই সড়ক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি প্রতীক। এটি মনে করিয়ে দেবে—বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে, নিজের সম্মান বজায় রেখেই প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে কথা বলতে চায়।’
নামফলক উন্মোচন শেষে ডিএনসিসি মসজিদের ইমাম মাওলানা আনসার উল করিম দোয়া পরিচালনা করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে প্রথম সড়কটির নতুন নাম ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে হৃদয়বিদারক ফেলানী হত্যাকাণ্ড ঘটে। ভারত থেকে বাবার সঙ্গে দেশে ফেরার পথে ১৫ বছর বয়সী ফেলানী খাতুন বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কাঁটাতারে দীর্ঘ চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা তার নিথর দেহ দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।