মিয়ানমারকে হারিয়ে এশিয়া কাপে এক পা বাংলাদেশের
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৫ PM , আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:১৬ AM
এএফসি উইমেন্স এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইতিহাস গড়ার পথে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা এবার এশিয়া কাপে খেলার সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ দিতে চলেছে।
বুধবার (২ জুলাই) ইয়াংগুনের থুয়ান্না স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৯তম মিনিটে লিড এনে দেওয়ার পর ৭২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্ণা। শেষ দিকে মিয়ানমারের উইন উইন ব্যবধান কমান।
এই জয়ে গ্রুপে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল লাল-সবুজেরা। আগের ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সবাইকে চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্টে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে পিটার জেমস বাটলারের দল। অন্যদিকে তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে আসর শুরু করা মিয়ানমারের পয়েন্ট ৩। আগামী শনিবার নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেদিন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু না ঘটলে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলা নিশ্চিত করবেন আফঈদা-স্বপ্নারা।
ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠে লড়াই। দ্বিতীয় মিনিটে বাইলাইনের একটু ওপরে থেকে মনিকা চাকমার ক্রস সরাসরি ধরা পড়ে মিয়ানমারের গোলরক্ষকের গ্লাভসে। পরের মিনিটেই প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ বাংলাদেশ বক্সে ঢুকে পড়ে, তবে সময়মতই ব্লক করে দেন শামসুন্নাহার সিনিয়র।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে গোলরক্ষক রুপনা চাকমার অসাধারণ বিচক্ষণতায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। মাঝমাঠ থেকে আসা থ্রু পাস মিয়ানমার ফরোয়ার্ডদের কাছে যাওয়ার আগেই পোস্ট ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে এসে বল ক্লিয়ার করে দেন তিনি।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে ডান দিক থেকে দুর্দান্ত গতিতে ড্রিবল করে মিয়ানমারের বক্সের দিকেই এগোচ্ছিলেন শামসুন্নাহার। তবে বক্সের ঠিক বাইরে ফাউলের শিকার হন তিনি।
ঋতুপর্ণা চাকমার নেওয়া প্রথম শটটি মিয়ানমারের মানব-দেয়ালে লেগে ফিরে আসে, কিন্তু ফিরতি বলে দারুণ এক কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান তিনি।
বিরতি থেকে ফেরার পর সমতায় ফিরতে সফরকারীদের শিবিরে চাপ বাড়ায় মিয়ানমার। দফায় দফায় হানা দিতে থাকেন স্বাগতিকরা। তবে শামসুন্নাহার সিনিয়র, আফঈদা খন্দকারদের দারুণ দৃঢ়তায় ভেস্তে যায় প্রতিপক্ষের প্রচেষ্টা।
ম্যাচের ৭২তম মিনিটে চালকের আসনে বসে বাংলাদেশ। বক্সের একটু ওপর বল পেয়ে খানিকটা এগিয়ে বাঁ পায়ে শট নেন ঋতুপর্ণা। হাওয়ায় ভেসে গোলরক্ষককের মাথার উপর দিয়ে লুটোপুটি খেয়ে জালে জড়ায় বল।
৭৭তম মিনিটে ফের দলের ত্রাতা রুপনা। সতীর্থের থ্রুয়ে ফাঁকা পেয়েই বক্সে ঢুকে পড়েন মাইয়াত এহিন। তবে এই ফরোয়ার্ডের পথ আগলে দাঁড়ান রুপনা। তাকে ফাঁকি দিতে ব্যর্থ হন মাইয়াত। ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্লাভসে বল নেন জোড়া উইমেন’স সাফজয়ী এই গোলকিপার।
এরপর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় বাংলাদেশ। রক্ষণ জমাটে আরও মনোযাগী হয় মেয়েরা। তবে ৮৮তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ্য পায় স্বাগতিকরা। নিখুঁত টোকায় রুপনাকে পরাস্ত করেন আনমার্কড থাকা উইন উইন।
অবশ্য এই ধাক্কা সামলে বাকি সময় কাটিয়ে দেয় মেয়েরা। শেষের বাঁশি বাজতেই দুর্দান্ত এই জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে লাল-সবুজেরা।