সকালের শুরুতেই কুমড়ার বীজ খেলে শরীরে যেসব পরিবর্তন ঘটবে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫২ AM , আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৯ AM
প্রতিদিন সকালে এক মুঠো কুমড়ার বীজ খাওয়ার অভ্যাস শরীরের ওপর ফেলতে পারে দারুণ ইতিবাচক প্রভাব। পরামর্শক ডায়েটিশিয়ান ও ডায়াবেটিস শিক্ষিকা কনিক্কা মালহোত্রা জানান, পুষ্টিগুণে ভরপুর কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও আয়রন, যা হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, হজম ও ঘুমের মান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, কুমড়ার বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। অন্যদিকে জিঙ্ক শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে থাকা ট্রিপটোফ্যান ও ম্যাগনেসিয়াম মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ঘুমের মান উন্নত করে এবং শরীরকে শান্ত করে।
এছাড়া কুমড়ার বীজে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান যেমন ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিনয়েড, যা দেহের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। এতে থাকা আঁশ হজমের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায় এবং মলত্যাগে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
মালহোত্রা বলেন, কুমড়ার বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কারণ এতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন শর্করার শোষণের গতি কমিয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সে আক্রান্তদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।
আরও পড়ুন : টানা ২ সপ্তাহ চিয়া সিড খেলে শরীরে যেসব পরিবর্তন ঘটবে
বিশেষ করে পুরুষদের প্রস্টেট সমস্যায় কুমড়ার বীজ উপকারী হিসেবে বিবেচিত। বিশেষজ্ঞরা জানান, বয়সভিত্তিক প্রস্টেট বৃদ্ধিজনিত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের প্রস্রাবজনিত উপসর্গ কমাতে এটি সহায়তা করতে পারে।
তবে এসব উপকারের পাশাপাশি কিছু সতর্কতাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞের ভাষ্য, যাদের কুমড়ার বীজে অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের এটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া যেসব ব্যক্তি রক্ত পাতলাকারী ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ কুমড়ার বীজ প্রাকৃতিকভাবে রক্ত তরল করার গুণসম্পন্ন ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। কিডনি সমস্যায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও সীমিত পরিমাণে গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। কারণ এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফসফরাস রয়েছে এটি কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
মালহোত্রা সতর্ক করে বলেন, অতিরিক্ত লবণযুক্ত কুমড়ার বীজ গ্রহণও ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যারা সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। এ ছাড়া যারা বেশি আঁশজাতীয় খাবারে সংবেদনশীল, তাদের অতিরিক্ত কুমড়ার বীজ খাওয়ায় হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সব মিলিয়ে, স্বাস্থ্যবান খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে কুমড়ার বীজ হতে পারে একটি কার্যকর সংযোজন। তবে পরিমাণের প্রতি সচেতন থেকে প্রতিদিন সকালে এক মুঠো পরিমাণ কাঁচা বা হালকা ভাজা এবং লবণবিহীন কুমড়ার বীজ গ্রহণ করলে মিলবে এর পূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা বলে পরামর্শ দেন পুষ্টিবিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস