বশেমুরবিপ্রবি

ছাত্রীদের দেখলেই অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি করছে বখাটেরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

‘গত দুইদিন যাবৎ আমরা বাইরে বের হওয়াতো দূরে থাক বাসার বারান্দাতেও যেতে পারছি না। সবসময় বাসার চারপাশে স্থানীয় বখাটে ছেলেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি করছে। এমনকি স্থানীয় মহিলারাও আমাদের নিয়ে বিভিন্ন বাজে মন্তব্য করছে। তাদের মনোভাব অনেকটা এমন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মানেই চরিত্রহীন।’

এভাবেই মেসে উত্যক্ত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।

শুধুমাত্র এই ছাত্রী নন; গত কয়েকদিনে এধরণের ঘটনার শিকার হয়েছেন গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মেসে বসবাসরত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী ইতোমধ্যে নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী হলে তাদের সহপাঠীদের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারকৃতরা ধর্ষণের কথা শিকার করেছে: র‌্যাব

মেস ত্যাগ করে হলে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের কেয়ারটেকারের কাছ থেকে বাসাট চাবি নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলো স্থানীয়রা। এছাড়া রাস্তাশ বের হলেই কটুক্তি শুনতে হচ্ছিলো তাই বাধ্য হয়ে হলে এক বান্ধবীর নিকট আশ্রয় নিয়েছি।’

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে স্থানীয় কর্তৃক উত্ত্যক্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু হয়। কিন্তু গত কয়েকদিনে উত্তক্ত করার হার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত প্রায় ৭২ ঘন্টা পার হলেও সকল ধর্ষকদের গ্রেপ্তার না হওয়া, তাদের পরিচয় প্রকাশিত না হওয়া, উপরন্তু ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেও পার পেয়ে যাওয়ায় উত্ত্যক্তকারীরা পূর্বের তুলনায় অধিক উত্তক্ত করার সাহস পাচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতিতে ধর্ষকদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করাসহ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

আরও পড়ুন: ধর্ষকরা নিয়মিত স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতো

এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত সকল ছাত্রীরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বশেমুরবিপ্রবিতে বর্তমানে জন ৩২৬৪ ছাত্রী অধ্যায়নরত যাদের মধ্যে আবাসন সুবিধা প্রাপ্ত মাত্র ৮৭৫ জন এবং প্রায় দুই হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন মেসে বসবাস করেন।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, ‘যেহেতু আমাদের মেসে পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা নেই তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থািত মেয়েদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর বাড়ির মালিকদের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!