বারো নয় এখন থেকে ১৬ অক্টোবরই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালিত হবে

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বা ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উদযাপনের তারিখ নিয়ে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ ও আলোচনা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মাভাবিপ্রবির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর। পরে ২০০১ সালের ১২ জুলাই সংসদে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। আর ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর আইসিটি ও সিএসই বিভাগের ক্লাস শুরুর মধ্য দিয়েই শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। 

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ১২ অক্টোবরকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হলেও সম্প্রতি এ তারিখ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষক, প্রক্টর, প্রভোস্ট, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার দিন ১৬ অক্টোবরকেই ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। তবে নতুন এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও ভিন্নমত।

দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ টেনে দেখা যায়, ঢাবির আইন পাস হয় ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ, তবে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই; সেই দিনটিকেই ঢাবি ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আবুল কাওসার বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর ক্লাস শুরুর দিনকেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করি। গঠনের প্রক্রিয়া বা অন্যান্য পূর্ববর্তী তারিখগুলো ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেগুলোকে দিবস হিসেবে ধরা যায় না।’

একই বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইমরান জাহান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর আগে আইন ও অবকাঠামোগত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। ক্লাস শুরুর আট দিন পর, ১২ জানুয়ারি ১৯৭১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়, আর দিনটিকেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করি।

যদি মাভাবিপ্রবির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় আইন এখনো পাস না হয়ে থাকে, তবে সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায় না, কারণ তখন এটি কেবল প্রস্তাবিত একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। আর যদি আইন পাসের পর আলাদা কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান না হয়ে থাকে, তবে ক্লাস শুরুর দিনটিকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকর যাত্রার সূচনা হিসেবে ধরা যায়। সর্বোপরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসন যে দিনটিকে নিজেদের সূচনা দিবস হিসেবে গ্রহণ করে, সেটিকেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে বিবেচনা করাই সবচেয়ে যৌক্তিক।’

আরও পড়ুন : ভোট দিতে ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছেন চবি শিক্ষার্থীরা

এ বিষয়ে মাভাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে আপত্তি ওঠার পর আমি একটি কমিটি গঠন করি, এবং কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ১৬ অক্টোবরকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


আমার বিশ্বাস, একটি বিশ্ববিদ্যালয় তখনই তার দিবসগুলো অর্থবহ হয়ে ওঠে, যখন সেটি একাডেমিক ও গবেষণার মানে উৎকর্ষ অর্জন করে। আমরা যদি সারা বছর শিক্ষা ও গবেষণায় ভালো করতে পারি, তাহলে এই দিনটিও আমাদের জন্য আরও গর্বের হয়ে উঠবে।’


সর্বশেষ সংবাদ