বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসনের দাবিতে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের  বিক্ষোভ
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  © টিডিসি

বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ডিপ্লোমার ভাইয়ারা এসো পরীক্ষা দেই, কোটার নামে বৈষম্য চলবে না চলবে না’; ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কিছু কাঠামোগত বৈষম্য বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের সাংবিধানিক অধিকার, মেধা ও পেশাগত মর্যাদার পরিপন্থী। এ বৈষম্যের ফলে দেশের প্রকৌশল ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার সংকট ও ন্যায্যতার অভাব তৈরি হচ্ছে। তাদের তিনটি যুক্তিসম্মত ও অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য দাবি উপস্থাপন করেন।

আরও পড়ুন: কুবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সমাপ্ত, প্রশ্নপত্র দেখুন এখানে

 দাবিগুলো হলো
প্রথমত, ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড/অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবার জন্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোনো কোটা বা সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। কারণ, ৯ম গ্রেড একটি প্রথম শ্রেণির পদ, যেখানে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হওয়া উচিত বিএসসি। বিসিএস কিংবা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যারা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সমমান পদে আসছেন, তাদের পাশ কাটিয়ে কোটাভিত্তিক পদোন্নতি মেধার চরম অবমূল্যায়ন। এটি সংবিধানের ২০(১) ও ২৯(১) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন।

দ্বিতীয়ত, টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড/ সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়েই চাকুরীর পরীক্ষায় সুযোগ পান। বর্তমানে এই পদে প্রায় ১০০% কোটা শুধু ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষিত, যা সাংবিধানিক ১৯(১), ২৭ ও সরকারি চাকরি আইন ৭(১) লঙ্ঘন করছে। ৪ বছরের পূর্ণাঙ্গ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীদের জন্য এই পদে আবেদনের কোনো সুযোগ না থাকা চরম বৈষম্য এবং মেধার চরম অবমূল্যায়ন।

আরও পড়ুন: রাবি ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষায় ৩ ভুল, নম্বর পাবেন সবাই

তৃতীয়ত, বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না-এ জন্য আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ডাক্তার, আইনজীবী, শিক্ষকের মতোই ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা থাকা উচিত। আইইবি অ্যাক্ট অনুযায়ী কেবল বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাই প্রকৃত ‘ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে স্বীকৃত। এই শব্দের অপব্যবহার বন্ধ করা জনস্বার্থে জরুরি।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষ্যমের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে পিডিবিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন ৬২.৭ শতাংশ, আর ডিপ্লোমা থেকে প্রমোশনপ্রাপ্ত ৩৭.২ শতাংশ হলেও তারা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাবি করছে। সরকারি প্রকৌশল বিভাগে অনুমোদিত কোটা ছিল ৩৩ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে প্রমোশন দেওয়া হয়েছে ৫১.৬ শতাংশ, যা অননুমোদিতভাবে বেশি। বিসিএসের মতো সর্বোচ্চ মেধাভিত্তিক নিয়োগেও ২০২৪ সালে গণ-পূর্ত ক্যাডারে প্রকৌশলীদের সংখ্যা মাত্র ২৫ জন। অন্যদিকে ২০২৪ সালে প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিপ্লোমাধারীদের সংখ্যা ১৯ জন, যা ৩৩.৩ শতাংশ নয়, বেড়ে হয়েছে ৪৩ শতাংশ কোটার সীমা লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন: এনসিপি ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, বহু বাংলাদেশপন্থির ভরসার জায়গা: আলাউদ্দিন

আমরা মনে করি, এই বৈষম্যগুলো দূর করা হলে প্রকৌশল পেশায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত হবে, ‘ইঞ্জিনিয়ার’ শব্দের অপব্যবহার বন্ধ হবে এবং প্রকৃত পেশাগত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা পাবে।

প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জানেন, যোগ্যরা যোগ্য স্থানে গেলেই কেবল দেশের উন্নতি সম্ভব। অযোগ্যরা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এটি শুধু প্রকৌশলীদের নয়, দেশের উন্নয়ন কাঠামোর প্রশ্ন। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টার নিকট জোর দাবি জানাই-অবিলম্বে মেধা, ন্যায় ও সংবিধানসম্মত সমতার ভিত্তিতে প্রকৌশল পেশায় শৃঙ্খলা ও সুবিচার নিশ্চিত করা হোক, বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি যে বৈষম্য করা হয় আসছে, তা দ্রুত নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হোক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence