রায়ে ‘সন্তুষ্ট’ বুয়েট শিক্ষার্থীরা, দ্রুত কার্যকরের দাবি

আবরার ফাহাদ
আবরার ফাহাদ  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে স্বাগত জানিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ রবিবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই রায় শুধু একটি বিচারের সীমানায় আবদ্ধ নয়, এটি ন্যায়বিচার, মানবিক মূল্যবোধ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।  

এর আগে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সম্প্রতি, হাইকোর্টও এই রায় বহাল রাখে।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির পলায়ন তাদের বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের এই শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের একজন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি কীভাবে কনডেম সেল থেকে পালিয়ে যেতে পারল, তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।  

শিক্ষার্থীদের দাবি, মুনতাসির আল জেমিসহ পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা এই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সহযোগিতা করেছে, তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শিক্ষার্থীরা বলেন, শহীদ আবরার ফাহাদের রক্তের সঙ্গে এটা গাদ্দারি। কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ দায় এড়াতে পারে না।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির নামে কোনো ধরনের সন্ত্রাস বা অনিয়মের স্থান নেই। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মতো অন্য কোনো সংগঠনও যেন সহিংসতার আশ্রয় না নেয়, সে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সজাগ থাকবেন। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, বুয়েটে কোনো ছাত্ররাজনীতি চান না এবং ক্যাম্পাসে জ্ঞানচর্চার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে সব শিক্ষার্থীকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।  

শিক্ষার্থীরা শহীদ আবরার ফাহাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ ক্যাম্পাস থেকে সহিংসতার জঞ্জাল দূর হয়েছে। তারা প্রতিজ্ঞা করেন, আবরারের দেখানো ন্যায় ও সাহসের পথ অনুসরণ করবেন এবং ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে একতাবদ্ধ থাকবেন।  

তারা বলেন, আবরার আমাদের আদর্শ, তার আত্মত্যাগ আমাদের চেতনা হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে যেন আর কোনো শিক্ষার্থী এমন নির্মমতার শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকব।


সর্বশেষ সংবাদ