চাঁবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগেই অনড় শিক্ষার্থীরা, নির্দোষ দাবি করছেন ভিসি

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিজয়ের পর থেকেই সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পাশাপাশি নিজ নিজ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরাও শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা চাঁবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগ নিয়ে কোনো আক্ষেপ করেননি। কিন্তু চাঁবিপ্রবি'র কিছু সংখ্যক ছাত্র-শিক্ষকগণ ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জোট বেঁধেছে। 

আন্দোলন শেষে এই মুহূর্তে সারাদেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও খুলেনি চাঁবিপ্রবি'র গেট। এদিকে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হলেও, হয়নি গত দুই মাসের বাড়িভাড়া বিল। এই নিয়ে শঙ্কিত আছেন বাড়ির মালিক জাকির হোসেন। ইতোমধ্যে আন্দোলনকে ঘিরে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে তাকেও। 

তিনি বলেন, গত দুই মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি। ব্যাংক লোন রয়েছে মাসিক। তিনি জানান, ভিসি থাকলে এতো সমস্যার সম্মুখীন হতো না তার। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন হয়েছে, ক্লাস‌ও শুরু হতো এবং চাঁবিপ্রবি'র কার্যক্রম আগের তুলনায় বর্তমান ভিসি থাকলে অনেকটাই এগিয়ে যেতো বলে মনে করেন তিনি। 

গতকাল শনিবার (৩১ আগস্ট) চাঁবিপ্রবি শিক্ষকদের একটি মিটিং হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরুর বিষয়ে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হবে কবে থেকে, তা জানতে চাইলে চাঁবিপ্রবি'র আইসিটি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন জানান, আমাদেরকে একটি  সিন্ডিকেট মিটিং করতে হবে, সিন্ডিকেট মিটিং শেষে বুঝা যাবে কবে থেকে ক্লাস শুরু করা যাবে। 

এরপর চাঁবিপ্রবি'র ভিসি থাকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা বলেন, তিনি থাকলেও আমাদের শিক্ষকদের কোনো আপত্তি নাই, না থাকলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে তারা এটাও বলেন, তাদের সকলেরই নতুন চাকরি। ৯জন শিক্ষক রয়েছেন, তারা সবাই ভিসি ড. নাছিম আখতারে'র হাত ধরেই আসা। তারা এও বলেন, চাকরি নিতে কাউকে দিতে হয়নি সামান্য এক পয়সাও। মেধায় চাকরি হয়েছে সকলের। যদিও আওয়ামী সরকারের আমলেই সকলের চাকরি হয়েছে। 

তবে, ছাত্র-শিক্ষকদের কারো সাথেই ভিসি থাকা বা না থাকার বিষয়ে বসা হয়নি এখনও তাদের। বর্তমানে ভিসি না থাকায় কি সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন তারা, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না শিক্ষকরা। 

এদিকে তথ্য পাওয়া গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দু-একজন শিক্ষক ছাত্রদের কে উস্কানি দিচ্ছে মিছিল মিটিং করার জন্য এবং ছাত্রদেরকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আন্দোলন করার জন্য, ব্যানার তৈরিতে তাদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা যায়। 

পরে সাংবাদিকদের গোচরে আসলে বিষয়টি নিয়ে চাঁবিপ্রবি'র শিক্ষক নাজিম উদ্দিন কে জিজ্ঞেস করলে তারা অস্বীকার করে বলেন, এটি বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

এদিকে চাঁবিপ্রবি উপাচার্য ড. নাছিম আখতার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সঠিকভাবে অনুসন্ধান করে দেখার জন্য। এছাড়াও ভিসি তার শিক্ষকদের সাথে বার বার বসার চেষ্টা করলে শিক্ষকরা জানান, আর বসার সুযোগ নাই। 

তিনি আরো বলেন, যেখানে আইনগতভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে এবং জাতীয় পর্যায়ের সমন্বয়করাও বিবৃতি দিয়েছেন শিক্ষকদের নিয়ে টানা হেঁচড়া না করতে, তাদেরকে পদত্যাগের জন্য বাধ্য  না করার জন্য। আইন না মেনে এখনো যদি তাকে নিয়ে পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয় তাহলে সেটা অবশ্যই আইনকে অবমাননা করা হচ্ছে এবং এটি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ