শাবিপ্রবি ছাত্রলীগ

কর্মীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় মানববন্ধন 

কর্মীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় মানববন্ধন 
কর্মীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় মানববন্ধন   © টিডিসি ফটো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শাহপরাণ হলের রুমে ঢুকে ফারদিন কবির নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারীরা। 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রুমে ঢুকে অতর্কিত এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারীরা।

রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের কর্মীরা জানান, গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে মোহাইমিনুল হেলাল ইফাত ও তার বান্ধবীকে আটকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারীরা তাদেরকে হেনস্তা করে। তখন ইফাতের বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এবং যৌন হেনস্তা করে। পরবর্তীতে ইফাত মোবাইল ফোনে তার বন্ধু, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারদিন কবিরকে সেখানে ডাকলে সেখানে হাতাহাতি হয়। কিন্তু পরে সমাধান করে দেয়ার কথা বলে শাহপরাণ হলে ডাকার পর রুমে ঢুকে রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের ফারদিনকে মারধর করে।

এ ঘটনায় মারধরের শিকার ফারদিন জানান, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেন তাকে ফোন দিয়ে শাহপরাণ হলে তার অবস্থান জানতে চান। অবস্থান জানানোর পরেই রুমে ঢুকে তাকে মারধর করা হয়। 

তিনি বলেন, বিষয়টা সমাধান করে দিবে বলে সাজ্জাদ ভাই আমাকে শাহপরাণ হলে আসতে বলে এবং আমার গায়ে হাত দেয়া হবে না বলে আমাকে আশ্বস্থ করে। তিনি আমাকে ফোন দিয়ে আমি কোথায় আছি জানতে চান। আমি তখন জানিয়েছি আমি ৩১৫ নম্বর রুমে ইফাতের সাথে আছি। এরপর তিনি কল রেখে দেয়ার ২-৩ মিনিট পর রুমে ঢুকে আমাকে জিআই পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। অবস্থান জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হওয়ার পর সাজ্জাদের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে এমন হামলা করা হয়েছে বলে মনে করেন ফারদিন। তিনি বলেন, না হলে তো আমার অবস্থান জানার কথা না তাদের। 

অন্যদিকে ফারদিনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন অ্যাখ্যা দিয়ে কিন্তু তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, যে কথা বলছে ওই কথার ভিত্তি নেই।

এদিকে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছে বিক্ষোভকারী ছাত্রলীগ কর্মী ও রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারীরা। 

তাতে বলা হয়েছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় সজীবুর রহমান ও সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে সৈয়দ মুজতবা আলী হল থেকে শাহপরাণ হলে ডেকে এনে ২১৫ নম্বর রুমে তাদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করা হয়। এছাড়া সজীবের অনুসারীদের মধ্যে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান খান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইলিয়াস সানি ও আরিয়ান, একই বর্ষের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হোসাইন আহমেদ শিমুল ও আয়াজ চৌধুরীসহ অজ্ঞাত অনেকেই এ হামলা চালায় বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়।

মারামারির ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর মিজানুর রহমান জানান, আমি আসলে বিষয়টা নিয়ে জানি না। আমি তোমাদের মতো ফেসবুকে দেখেছি। আমাকে কেউ কোনোকিছু আপডেট করে নাই, জানায়ও নাই। 

মারামারি ও সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্ধের প্রশমনের বিষয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আমি এগুলো নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমাদের নতুন প্রক্টর স্যার আসছে। আগে কি হইছে এগুলো নিয়ে বলে তো আর লাভ নেই। যিনি নতুন করে আসছে তিনি হয়তো নতুন করে আবার আমাদেরকে ডাকবে। ডেকে কৌশলগত দিকগুলো আলোচনা করবে। তখন আমরা বলতে পারব। 

আর অভিযোগপত্রের বিষয়ে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান বলেন, এই সংক্রান্ত কোনো অভিযোগপত্র আমার হাতে নাই। হলে মারামারির বিষয়ে আমাদের কমিটি কাজ করছে।

এ নিয়ে রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা ইভটিজিংয়ের কেইস, আমার ডিপার্টমেন্টের মেয়ে জুনিয়র, তার সাথে আমার গ্রুপের একটা জুনিয়র, তারা একসাথে ছিল। সেখানে তারা মেয়ে জুনিয়রকে টিজ করেছে। টিজ করার কারণেই আমার জুনিয়র ফারদিনকে ডেকেছে। সেখানে ফারদিন ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় তাদের সাথে হাতাহাতি হয়েছে। পরে হলে গিয়ে তারা ফারদিনকে মেরেছে। তাও আমি যখন মিটমাট করার জন্য পাঠাচ্ছিলাম তখন তাকে রুম ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে মেরে আসছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমান বলেন, প্রথমে এক পক্ষ হাতাহাতি করছে পরে আরেক পক্ষ সামনে পেয়ে আঘাত করছে। পরে আমরা সিনিয়ররা গিয়ে তার সমাধান করে দিয়েছি। ওই গ্রুপের সিনিয়র ছিলো না, সিনিয়র আসলে এ নিয়ে সমাধানে বসা হবে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence