দুই শ্রেণির বই ছাপার চুক্তিই হয়নি, জানুয়ারিতে নতুন বই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা
- রায়হান উদ্দিন
- প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৯ PM , আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৯ PM
নতুন শিক্ষাবর্ষে (২০২৬) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই ছাপার কাজ প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। তবে মাধ্যমিকের ৭ম ও ৮ম শ্রেণির বই ছাপার জন্য প্রেসগুলোর সঙ্গে এখনও চুক্তিবদ্ধও হতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ফলে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সারাদেশের ৫৮৫ বিতরণ কেন্দ্রে বই পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। ফলে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারি মাসে নতুন বই দেওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, বই ছাপার কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় জানুয়ারি মাসে ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই না পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানুয়ারি পার হয়ে ফেব্রুয়ারি কিংবা তারও পরে তাদের হাতে বই পৌঁছাতে পারে।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রায় ৩ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৭টি বইয়ের ছাপার কাজ ৫০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। ৩৫টি প্রেসে এ কাজ চলমান রয়েছে। ৯ম শ্রেণির ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮টি বইয়ের ইতোমধ্যে ৯৭টি প্রেসে ২২১ লটে ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। আর ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৯৮টি লটের মধ্যে ৩০টি লটের কাজ শুরু হয়েছে।
৭ম ও ৮ম শ্রেণির বই ছাপাতে প্রেসগুলোর সঙ্গে এখনো চুক্তিই করতে পারেনি বলে মাধ্যমিকের বিতরণ শাখার নিয়ন্ত্রক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে। তবে এসব শ্রেণির বই ছাপার কাজ করাতে খুব শিগগিরই প্রেসগুলোর সঙ্গে চুক্তি করার জানানো হয়।
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হবে, যার মধ্যে মাধ্যমিকের বই ২১ কোটি ৯০ লাখ। ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির মোট বইয়ের সংখ্যা যথাক্রমে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০৯, ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ ও ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮টি।
জানা গেছে, বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিতে গত এপ্রিল মাসে কাজ শুরু করে এনসিটিবি। মে-জুলাইয়ে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল অক্টোবরের মধ্যে ছাপা শেষ করে ডিসেম্বরে সব উপজেলায় পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া। তবে সেপ্টেম্বরের দিকে সে লক্ষ্যে ছেদ পড়ে। সরকারের ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটি ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ক্রয়াদেশে অনুমোদন না দেওয়ায় টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। রিটেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্রয়াদেশ পেতে সময় লেগেছে বাড়তি আড়াই মাস।
পাশাপাশি নবম শ্রেণির প্রায় ৬ কোটি বই ছাপার ক্রয়াদেশের অনুমোদন দিতেও দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে পাঠ্যবই ছাপায় পিছিয়ে পড়ে এনসিটিবি। নবম শ্রেণির বইয়ের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (নোয়া) জারি হয়েছে ২৭ অক্টোবর। নোয়ার পর ছাপাখানা মালিকরা চুক্তির জন্য ২৮ দিন সময় পান। এদিকে ৯ম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। আর ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৯৮টি লটের মধ্যে মাত্র ৩০টি লটের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ৭ম ও ৮ম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য এখনো কোনো চুক্তিই করতে পারেনি এনসিটিবি। এতে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিটিবির এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রেসের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর ২৮ দিনের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়াসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করার জন্য ২৮ দিন সময় থাকে। সে হিসেবে নভেম্বর মাস শেষ হয়ে যাবে। ছাপার কাজ শুরু হতে ডিসেম্বর মাস হয়ে যাবে। এতে নতুন বছরের শুরুর মাসে ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সময়মতো বই পাবে না।