উচ্চশিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অক্ষম ৮৩% দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী

গবেষণা প্রতিবেদন

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে বাঁধা। শতকরা ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন না। যেহেতু শিক্ষা ক্রমবর্ধমান ভাবে ডিজিটালাইজ হচ্ছে, ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন পাঠ্যক্রম গ্রহণে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। 

ভিজুয়ালী ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস) কর্তৃক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘উচ্চশিক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহারে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি অংশীজনদের সাথে অবহিত-করণ  টাউন হল সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। 

অবহিত-করণ সভায় গবেষকগণ জানান, ২০২১ সালের জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জরিপ (এনএসপিডি) অনুসারে, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ০.৪৬% দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অধিকন্তু, ২০২১ সালের এনএসপিডি জরিপ দেখায় যে, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা স্তরে ২.১৮% দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। 

ভিপস পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে ৫২.১১% দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা সীমিত পারিবারিক আয়ের কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রযুক্তি ক্রয়ে বাঁধার সম্মুখীন হয়। ৯২.৯৬% দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা তাদের উপযোগী পাঠ্য উপকরণ পায় না। উপরন্তু, ৯১.৫৫% শিক্ষার্থী মনে করে দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাব রয়েছে এবং ৩৫.২১% মনে করে প্রযুক্তিগত বাঁধা রয়েছে, ৫৩.৫২% শিক্ষার্থী মনে করে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভাষাগত  প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। 

অন্যদিকে ৮৩% শিক্ষার্থীরা তাদের উপযোগী ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারে না। এই গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উচ্চশিক্ষায় বাঁধা দূরীকরণে শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ে সহায়ক প্রযুক্তি নির্ভর রিসোর্স সেন্টার স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি সংস্থা এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন প্রয়োজন।

ভিপস এর পক্ষে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এডভোকেট রেজমিন ইমরোজ, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী উন্নয়নকর্মী মো. আরিফ হোসেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালের শিক্ষার্থী মুনতাহা ফারিন এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। তারা সম্প্রতি উক্ত সভায় গবেষণাটির ফলাফল প্রকাশ করেন।

ভিপস এর সভাপতি এডভোকেট মো. মোশাররফ হোসেন মজুমদার সভাপতিত্বে অবহিতকরণ বিষয়ক টাউনহল সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা) ড. মো. মোকতার হোসেন। 

ভাস্কর ভট্টাচার্য, জাতীয় পরামর্শক এক্সেসিবিলিটি, এটুআই প্রোগ্রাম, আইসিটি বিভাগ; মোহাম্মদ শাহজাহান, প্রভাষক, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) মো. গোলাম সারওয়ার, অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। ভিপস কর্তৃক আয়োজিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অমিত সভায় সঞ্চালনা করেন। 

এই সভায় উপস্থিত ছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, এনজিও ও আইএনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ভিপস এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কেয়ারগিভার প্রমুখ।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এম জে এফ) এর ইয়ুথ এঙ্গেজমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি (ইয়েড) প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় এবং গ্লোবাল রিসার্চ এন্ড মার্কেটিং (জি আর এম) এর কারিগরি সহায়তায় এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence