জন্ম পরিচয় দিয়ে নির্ধারিত হয় ৭১ শতাংশ মানুষের রোজগার

৭১ শতাংশ মানুষের রোজগার নির্ধারিত হয় তাদের জন্মসূত্রে
৭১ শতাংশ মানুষের রোজগার নির্ধারিত হয় তাদের জন্মসূত্রে  © আইএলও

বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন হলেও বৈষম্য, আস্থাহীনতা ও নীতির ঘাটতি এখনো সামাজিক ন্যায়বিচারের পথে বড় অন্তরায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বলছে, বিশ্বে এখনো ৭১ শতাংশ মানুষের রোজগার নির্ধারিত হয় তাদের জন্মসূত্রে। অর্থাৎ কোন দেশে জন্ম হয়েছে, কোন লিঙ্গের মানুষ, পারিবারিক পটভূমি কেমন ইত্যাদির ভিত্তিতে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ‘সামাজিক ন্যায়বিচারের অবস্থা: অগ্রসরমাণ একটি কাজ’ শীর্ষক প্রতিবেদন এসব কথা বলেছে সংস্থাটি।

১৯৯৫ সালের সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক কোপেনহেগেন শীর্ষ সম্মেলনের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আইএলও। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হতে চলা বিশ্ব সামাজিক শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে এটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক লিঙ্গভিত্তিক মজুরিবৈষম্য এখনো দূর হয়নি। শ্রমশক্তিতে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণের ব্যবধান ২০০৫ সালের পর থেকে মাত্র ৩ শতাংশ কমেছে। এই হার এখন ২৪ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে বৈশ্বিক লিঙ্গভিত্তিক মজুরিবৈষম্য দূর হতে আরও ১০০ বছর লাগবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মানুষের আস্থা কমেছে এবং বিরাজমান বৈষম্যের কারণে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক অগ্রগতি স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তবে তিন দশকে দারিদ্র্য হ্রাস, শিক্ষা ও উৎপাদনশীলতায় উন্নতি হয়েছে।

আরও পড়ুন: মেডিকেল শিক্ষকের অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য, শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন

এছাড়া শিশুশ্রমের হার ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে নেমেছে। চরম দারিদ্র্য ৩৯ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১০ শতাংশ। প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পন্নের হারও বেড়েছে ১০ শতাংশ। প্রথমবারের মতো বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যার সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করাও সম্ভব হয়েছে। তবে এত অর্জনের সুফল সবার মধ্যে সমানভাবে পৌঁছায়নি। অগ্রগতির আড়ালে প্রচুর বৈষম্য রয়ে গেছে।

আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবো বলেন, ‘বিশ্বে অবশ্যই অগ্রগতি হয়েছে। তবে আমরা এ কথা উপেক্ষা করতে পারি না যে, এখনো কোটি কোটি মানুষ কাজের মর্যাদা ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত। সামাজিক ন্যায়বিচার শুধু নৈতিক প্রয়োজন নয়, এটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সামাজিক সংহতি ও শান্তির জন্য অপরিহার্য।’


সর্বশেষ সংবাদ