প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের ক্ষমতায়নে ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল অর্থায়ন ‘সাফল্য’

ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল অর্থায়ন প্রোগ্রাম ‘সাফল্য’
ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল অর্থায়ন প্রোগ্রাম ‘সাফল্য’  © সংগৃহীত

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে চলেছে ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল অর্থায়ন প্রোগ্রাম ‘সাফল্য’। জামানতবিহীন এই ঋণসুবিধা পাওয়া যায় দ্রুততম সময়ে, যেখানে প্রয়োজন হয় নামমাত্র কিছু কাগজপত্রের। ফলে এ ডিজিটাল লোন প্রান্তিক এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য অর্থায়ন সুবিধা করেছে আরও সহজ, সুবিধাজনক ও বিস্তৃত।

কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের মতো ঋণসুবিধার বাইরে থাকা শ্রেণি-পেশার মানুষদের জন্য এ ডিজিটাল লোন ‘সাফল্য’ বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়া হওয়ায় প্রচলিত ঋণব্যবস্থায় মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলো এখানে থাকছে না। স্বল্প ডকুমেন্টশনের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই এই ঋণ পাওয়া যায়। প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের জন্য এই সুবিধা এক সময় স্বপ্ন মনে হলেও বর্তমানে এটিই এখন বাস্তবতা। 

শেরপুরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হওয়া এই ডিজিটাল ঋণসুবিধা বর্তমানে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, জামালপুর, সাতক্ষীরা এবং চর অঞ্চলসহ ১৫টিরও বেশি অঞ্চলের মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। 

‘সাফল্য’ ডিজিটাল লোনের আওতায় এসব অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ৫০০ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণসুবিধা পাচ্ছেন। আবেদন, যাচাইকরণ ও ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড হওয়ায় গ্রাহকরা মাত্র কয়েক মিনিটেই এই ঋণ নিতে পারছেন, যেখানে পূর্বে ঋণ পেতে গ্রাহকদের সপ্তাহব্যাপী নানান দৌড়ঝাঁপের মধ্য দিয়ে যেতে হতো।

আরও পড়ুন: ৪৯তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি জারির তারিখ প্রকাশ, ছয়টির সূচি ঘোষণা

গ্রাহকরা ব্র্যাক ব্যাংকের যেকোনো শাখা, এসএমই অফিস, এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে অথবা ঘরে বসে ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল লোন প্ল্যাটফর্ম ‘সুবিধা’ অ্যাপ ও ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ ব্যবহার করে সহজেই এই ঋণের আবেদন করতে পারবেন।

গ্রাহক আবেদনের পর এআইভিত্তিক ক্রেডিট স্কোরিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হলেই এই ঋণের ডিজিটাল বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। গ্রাহকরা চাইলে ডিজিটাল কিংবা প্রচলিত চ্যানেল উভয় মাধ্যমেই ঋণ পরিশোধ করতে পারেন। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের ঋণসীমা বৃদ্ধি পেয়ে যায়, যা গ্রাহক কর্তৃক ঋণের দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং আর্থিক টেকসইতাকে উৎসাহিত করে।

অর্থায়নের সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকরা বীজ বপনের মৌসুমের শুরুতে ঋণ নিয়ে ফসল ওঠার পর সেই ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পান। ফসলচক্রের সাথে মিল রেখে এই ঋণসুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন, যা ইনফরমাল ঋণব্যবস্থায় কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।

এই ডিজিটাল লোনের সম্প্রসারণ ও দায়িত্বশীল অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি এবং ফিনটেকের সাথে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখছে, যাতে তৃণমূল পর্যায়ের আরও বেশি মানুষের কাছে এই ঋণসুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়। এই অংশীদারিত্ব বাজার গবেষণা, ডেটা বিশ্লেষণ এবং আর্থিক সাক্ষরতাতে সহায়তা করে, যা প্রকৃত সুবিধাভোগীর কাছে এই ঋণ পৌঁছানোর ব্যাপারটি নিশ্চিত করে।

আরও পড়ুন: ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ পছন্দক্রমসহ ভর্তি আবেদন শেষ আজ

২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ‘সাফল্য’-এর মাধ্যমে ৭ হাজার ৯০০টির বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যা অর্থনৈতিক পরিসরে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে চলেছে। এই ঋণের সুবিধাভোগীরা কৃষিক্ষেত্রে উন্নত ফলন, আয় বৃদ্ধি এবং নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংককে জানিয়েছেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের এই ডিজিটাল লোন ‘সাফল্য’ কেবল প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করে চলছে না, বরং তৃণমূল পর্যায়ের এই জনগোষ্ঠীকে ইনফরমাল ঋণের প্রভাব থেকেও মুক্ত রাখছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণের সুদ অত্যাধিক মাত্রায় হওয়ায় ঋণগ্রহীতাকে প্রায়ই বিপদের সম্মুখীন হতে হতো।

অর্থায়ন সুবিধা ডিজিটাইজড করার মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সবাই একযোগে কাজ করবে।

 


সর্বশেষ সংবাদ