আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিলেন ঢাবির সেই ছাত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৩৬ PM , আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০, ১২:০১ AM
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় ভিকটিম (ছাত্রী) নিজে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন আরা ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় ভিকটিমের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্র বলছে, মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই ছাত্রীকে আদালতে হাজির করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করে। আদালত অনুমতি দিলে, ওই ছাত্রী সেদিন যা যা ঘটেছিল তা সবিস্তারে বলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার এই ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার মজনুকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ঢাকার সিএমএম আদালত। আসামি মজনু ডিবি হেফাজতে রয়েছেন।
মজনুর চাঞ্চল্যকর তথ্য: এদিকে মজনুর সঙ্গে এক পাগলী মহিলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ওই নারীকে ‘বউ’ দাবি করেছেন মজনু। ধর্ষক মজনু এ ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য দিয়েছেন পুলিশের কাছে। তিনি বলেছেন, আধাপাগল এক ধর্ষিতা দিয়ে ভিক্ষা করিয়ে মাদক সেবন করতেন তিনি। যদিও সেই পাগল মহিলাই ভাইরাল হওয়া ভিডিও’র মহিলা কিনা- সে ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তথ্য মতে, প্রায় ২ মাস আগে চট্টগ্রাম কাজীর দেউড়ি এলাকার এক আধাপাগল নারীকে বেশ কিছুদিন দফায় দফায় ধর্ষণ করেন মজনু। পরে তাকে একটি লোকাল ট্রেনে করে ঢাকায় নিয়ে এসে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এলাকায় রাখেন। ওই নারীকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন মজনু। ওই নারীর আয় দিয়ে তিনি ড্যান্ডি সেবন করতেন। কিছুদিন আগে ওই নারীর চুল কেটে দিয়ে তাকে বিদায় করে দেন তিনি। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে এমন তথ্যই দিয়েছেন মজনু।
এর আগে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসামি মজনু কোনো কথা বলেননি। তাকে বিচারকও কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। শুরুর ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয় শুনানি। এ সময় ধর্ষণের আসামি মজনুর পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে গলফ ক্লাব-সংলগ্ন স্থানে পৌঁছান। এ সময় আসামি মজনু তাকে পেছন থেকে গলা ধরে মাটিতে ফেলে দেন। তার গলা চেপে ধরেন। ছাত্রী চিৎকার করতে গেলে মজনু তাকে কিলঘুষি মারেন। ভয়ভীতি দেখান। ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ধর্ষণ করেন আসামি মজনু। পরে মজনুকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড হতে ৪০-৫০ গজ সামনে আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছায় ভিকটিম। এরপর আসামি পেছনের দিক থেকে ভিকটিমের গলা ধরে ফুটপাতে ফেলে দেয়। এরপর গলা চেপে ধরে। ভিকটিম চিৎকার করতে গেলে আসামি তাকে কিল-ঘুষি মেরে ভয়ভীতি দেখালে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন মজনু ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। বুধবার ভোর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে ‘ধর্ষক’ মজনুকে আটক করে র্যাব।