সেই মামার চিকিৎসা খরচ জোগাড়ে কোটা সংস্কারের নেতারা
- মোতাহার হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৫৬ PM , আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩০ PM
মামার অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির গেইটে ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসিয়েছেন ঢাবি ছাত্রী ফারজানা সুলতানা। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিটের চতুর্থ বর্ষের পড়ছেন।
মামার জীবন বাঁচাতে টিএসসির প্রবেশপথের ডানে ছোট একটি স্টল নিয়ে বসে আছেন এ শিক্ষার্থী। সেখানে তিনি পায়েস, ভাত, মুরগী, মাছ ভাজা, মাছের ডিম, বেগুন ভাজা, আম ডাল, কুমড়ো ভাজা, টমেটো ভর্তা, পটল ভর্তা, সিম ভর্তা, ঢেঁড়স ভর্তাসহ হরেক রকমের বাঙালি ঐতিহ্যবাহী খাবার বিক্রি করছেন।
এবার ওই ছাত্রীর মামা জীবন বাঁচাতে পাশে দাঁড়িয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ঢাবি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায় তারা ফারজানার মামার চিকিৎসা খরচের জন্য টাকা কালেকশন করছেন।
এ ব্যাপারে সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এবং বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে ফারজানার মামার চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর পক্ষ থেকে ফান্ড কালেকশন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় সর্বদায় আমরা পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
অপর যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, ফারজানা তার মামার জীবন বাচাতে টিএসসিতে খাবারের স্টল দিয়েছে। মানুষ সমস্যায় পড়লে মানুষের কাছে হাত পাতে কিন্তু সে তা করে নাই। সে আমাদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি।
ফারজানা বলছিলেন, স্টল থেকে যে টাকা আসছে তা দিয়ে তার মামার চিকিৎসার খরচ জোগাড় হবে না। তাই আমরা তাকে বলেছিলাম, স্টুডেন্ট থেকে কালেকশন করব। আমরা আজ বিকালে দুটি লাইব্ররি থেকে ১৭ হাজার ৬১০ টাকা তুলেছি। বিকালেই তার কাছে সব টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত,ফারজানার মামা আবু মুসা পেশায় একজন রিক্সা চালক। এক সপ্তাহ আগে তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। যার জন্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু তিনি আত্মসম্মাবোধের কারণে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য মানুষের কাছে টাকা চাইতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি মরে গেলে আমার ছেলে-মেয়েকে তোমরা দেখো, ‘মানুষের কাছে টাকা চেয়ো না।’
ফারজানা এ ব্যাপারে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ মহৎ মনের মানুষটি আমার মামা। তার এ বিপদে যদি আমরা এগিয়ে না আসি। তাহলে সেটা হবে চরম অমানবিকতা। তার আদর্শের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সাহায্য না চেয়ে এখানে খাবার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত খাবার বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।