সাইকেল চালিয়ে সব জেলায় ঘুরলেন ঢাবি ছাত্র আশিক

আতিকুর রহমান আশিক
আতিকুর রহমান আশিক  © টিডিসি ফটো

বাই সাইকেল চালিয়ে দেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করলেন আতিকুর রহমান আশিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

নাটোরের লালপুরের ছেলে আতিক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক বৈচিত্রতা, সৌন্দর্য ও জ্ঞানার্জনই ছিল এ ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য। বুদ্ধি হবার পর থেকে শুনি দেশে ৬৪ জেলা। অবশেষে ঘুরে দেখলাম তার চেহারা, পড়লাম তার ইতিহাস, দেখলাম বাংলার কোথায় কি আছে।

তিনি বলেন, ভৌগলিক বৈচিত্র্য দেখার প্রবল উৎসাহে আমার সৌন্দর্য পিপাসু মন ছুটে বেড়িয়েছে জেলা থেকে জেলা। মধুপুর বনাঞ্চল পেরিয়ে উত্তরবঙ্গের শুষ্ক নদীর বুকে ধান চাষ যেমন দেখেছি তেমনি দেখেছি দক্ষিণাঞ্চলের নদী গুলির ভরা যৌবন, টইটম্বুর দুই তীরে সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া, গোলপাতার রাজত্ব। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে কিংবা পাহাড়ের বুক চিরে এত উচুঁতে পিচ ঢালা রাস্তা দেখে যেমন বিস্মিত হতে হয় ঠিক তেমনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টি কৌশল চিন্তা করলে মাথানত হয়। একদিকে পেরেক মেরে রেখেছেন অপরদিকে দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি যেন স্রষ্টার নামে আন্দোলিত হচ্ছে! সৃষ্টির মাঝেই জীবনের গল্প খুঁজে ফিরেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই সাইকেল প্রেমী। সাইকেল নিয়ে তখন গ্রামের পদ্মার পাড়ে চলতো দুরন্তপনা। সাইকেল নিয়ে পুরো দেশ ঘুরার দুঃসাহস মাথায় কিভাবে আসলো জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সাইকেল কিনেই ময়মনসিংহ দিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর বিভিন্ন সময়ে অবসরে ছুটিতে নাটোর, রাজশাহী, টুঙ্গিপাড়া, ষাট গম্বুজ মসজিদ, বরিশাল। এরপর যাই রংপুর, পঞ্চগড়। এরও কিছুদিন পর মুজিবনগর, খুলনা, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর দিয়ে ফেনী, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার এবং সবশেষে নেত্রকোনা, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ দিয়ে ৬৪ জেলার এ দীর্ঘ ভ্রমন শেষ করি।

৬৪ জেলার পথে সবচেয়ে স্মরণীয় দিন সম্পর্কে তিনি জানান, রাঙ্গামাটি থেকে কাপ্তাই লেক ধরে পাহাড়ের পর পাহাড় টপকিয়ে বান্দরবান যাওয়ার সময় সুন্দরে আমি মরে গিয়েছিলাম! মেরিন ড্রাইভ রোডের মতই একপাশে নীল জলরাশি অপর পাশে বিস্তৃত পাহাড় চূড়ায় মেঘের ছড়াছড়ি দেখে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম, সাইকেলের কন্ট্রোল হারিয়ে পড়েছিলাম পাহাড় ছিটকে! ৬৪ জেলার হাজারো অভিজ্ঞতা তার ঔপন্যাসিক মানসিকতাকেও সমৃদ্ধ করেছে বলে জানান তিনি।

সময় কতদিন লেগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩৫ দিনের মত সময় লেগেছে। রাত কাটিয়েছি সাধারণত আবাসিক হোটেলেই। তার পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আতিক বলেন, বাইক নিয়ে কোলকাতা, দার্জিলিং, কাশ্মীর এবং নেপাল, ভুটান যাবো। পাসপোর্ট ও ভিসা পেলে একশত দেশ ভ্রমণের ইচ্ছা আছে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ