ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত, পদত্যাগ ড. মিজানের
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০১৯, ০৮:২৯ PM , আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯, ১০:১৪ PM
ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের নীতিজ্ঞান হারিয়ে এমন আচরণ করেছে, যা আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আর তাদের পক্ষ নিয়ে ছাত্রলীগও আমাকে ও আমার ছেলেকে হেনস্থা করেছে যা লাঞ্ছিত করার শামিল। তাই আমি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিই।’
শুক্রবার বিকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এর আগে দুপুরে হলের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়ে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিজানুর রহমানের ছেলে ‘বেয়াদবি’ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তোলেন।
জানা যায়, শুক্রবার ফজলুল হক মুসলিম হলের মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার সময় এক শিক্ষার্থীর সাথে প্রাধ্যক্ষের ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মাঝে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ নিয়ে প্রাধ্যক্ষের সাথে অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। প্রাধ্যক্ষ আসলে তাঁর ছেলে আরো সাহস পেয়ে বলে উঠে, ‘দুই টাকার স্টুডেন্ট তোমরা আমার কী করবা?’ এ কথা শুনে শিক্ষার্থীরা আরো উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং প্রাধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে হল সংসদে ছাত্রলীগ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শাহরিয়ার সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাহফুজুর রহমানসহ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও তাঁর ছেলেকে হলের শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভটি একপর্যায়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়।
অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, কে বা কারা আমার ছেলেকে মেরে ওর চশমা ভেঙে ফেলেছে। আমার ছেলে বলেছে যে ও ইচ্ছা করে কারও গায়ে পা দেয়নি, ভুলক্রমে হয়ে গেছে। কে এই কাজটি করল, জানতে গেলে তাঁরা আমারও মর্যাদাহানি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের নীতিজ্ঞান হারিয়ে এমন আচরণ করেছে, যা আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আশা করছি, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে এমন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে, যাঁরা হবেন নীতিজ্ঞানসম্পন্ন৷’ এই ঘটনায় দুঃখ পেয়ে আজ বিকেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগের চিঠি দিয়ে এসেছেন বলে জানান।
এদিকে, হল শাখা ছাত্রলীগের বিক্ষোভের মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শান্ত করেন তাঁরা।