‘পুলিশ পরিচয়ে ঢাবি ছাত্রীকে তুলে নেওয়া ব্যক্তিকে খুঁজছে ডিবি’

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ   © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকায় রিকশার গতিরোধ করেন মোটরসাইকেলে ‘পুলিশ’ স্টিকার লেখা এক ব্যক্তি। এরপর ওই ব্যক্তি ছাত্রীর হাতে থাকা একটি ব্যাগের দিকে তাকিয়ে কর্কশ ভাষায় বলতে থাকেন— এ ব্যাগে অবৈধ জিনিসপত্র রয়েছে। আপনাকে থানায় যেতে হবে।’

কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রিকশা থেকে নামিয়ে ওই ছাত্রীকে মোটরসাইকেলে তুলে দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকেন ওই ব্যক্তি। এরপর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ির নির্জন এলাকায় নিয়ে ছুরিকাঘাতের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ঢাবির ছাত্রী। এরপর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থীকে গতিরোধ করে দিয়াবাড়ির নির্জন এলাকায় নিয়ে ছুরিকাঘাতের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। আশাকরি, দু'তিন দিনের মধ্যে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুনঃ মানবিকের শিক্ষার্থীরা কীভাবে ঢাবির বিজ্ঞান বিষয়ে পড়বেন, জানালেন ডিন

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগে বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট দুপুর দেড়টায় তিনি কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশাযোগে বাসায় যাচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ মোটরসাইকেলে আসা এক ব্যক্তি তার গতিরোধ করে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে দাঁড়াতে বলেন। পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির মোটরসাইকেলের সামনে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছিল। গতিরোধ করে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ভিকটিমকে বলেন, আপনার সঙ্গে থাকা ব্যাগে অবৈধ জিনিসপত্র রয়েছে, আপনাকে থানায় যেতে হবে।

এ অবস্থায় পুলিশ পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির বক্তব্যে বিব্রত হয়ে তার মোটরসাইকেল ওঠেন ভুক্তভোগী। শিক্ষার্থীকে মোটরসাইকেলে তুলেই দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকেন ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে দিয়াবাড়ির নির্জন এলাকায় নিয়ে ছুরিকাঘাতের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন এবং কানের দুল ছিনিয়ে নেন।

ভিকটিমের স্বর্ণালঙ্কার লুট করার সময় পাশ দিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ভিকটিমের সঙ্গে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির আচরণ অস্বাভাবিক মনে হলে তিনি এগিয়ে যান। স্থানীয় ব্যক্তিকে এগিয়ে আসতে দেখে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ভিকটিমের স্বর্ণালঙ্কার ও ব্যাগ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয় ওই ব্যক্তি বিষয়টি তুরাগ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশের একটি দল ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। ওই দিনই তুরাগ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন অপহরণের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী।

পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেলে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্বর্ণকার লুটের ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ-ডিবির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। যে পথে ভিকটিমকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই পথের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত ওই ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। অপহরণকারী ও তার মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করতে আমাদের কাজ চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ