‘তোর কারণে নকল করতে পারিনি’, বলেই শিক্ষককে পেটালেন সাবেক ছাত্র

সাবেক শিক্ষার্থীর মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষক
সাবেক শিক্ষার্থীর মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষক  © সংগৃহীত

নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে এক শিক্ষককে পিটিয়ে আজ শনিবার দুপুরে সেই ক্ষোভ ঝারলেন সাবেক এক ছাত্র।

ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায়। মারধরের শিকার হেলাল উদ্দিন টুমচর আসাদ একাডেমির ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক। সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের গান্ধর্বপুর এলাকার লকিয়ত উল্যার ছেলে তিনি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মুরাদ হোসেন (২২)। তিনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং টুমচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাসেমের ছেলে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন হেলাল উদ্দিন। বিদ্যালয়ে প্রবেশ মুখে পথরোধ করে দাঁড়ায় আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা মুরাদ ও তাঁর ৬ / ৭ জন সহযোগী। এভাবে পথ আটকানোর কারণ জানতে চাইতেই তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষকের ওপর হামলা করেন।

এ সময় মুরাদ বলতে থাকেন, ‘২০১৭ সালে তোর কারণে টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। তোর কারণে বিদ্যালয়ে থাকার সময় পরীক্ষায় নকল করতে পারিনি। আজ তোকে পাইছি।’ এই বলে কিল-ঘুষি-লাথি দিয়ে মারাত্মক জখম করেন শিক্ষককে। এ সময় শিক্ষকের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করেন তারা। অন্য শিক্ষকেরা এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘২০১৭ সালে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করার কারণে মুরাদ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। ওই সময়ে দায়িত্বরত অধ্যক্ষ তাকে সুযোগ দেয়নি। আমি কোনো অন্যায় করিনি। তারপরও মুরাদের নেতৃত্ব ৬-৮ জন সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা করে এবং আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলাকারী সবাইকে না চিনলেও মুরাদকে চিনতে পেরেছি।’ 

এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মুরাদ হোসেনের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

এ নিয়ে বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক সদস্য সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘ছাত্র হয়ে শিক্ষকের ওপর এভাবে হামলা মেনে নেওয়া যায় না। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা উচিত।’ 

টুমচর আসাদ একাডেমি অধ্যক্ষ ফারজানা নুর বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। প্রাক্তন ছাত্র কীভাবে শিক্ষকের ওপর হামলা করে! আমরা বিদ্যালয়ে সব শিক্ষক বসে আজই সিদ্ধান্ত নিব। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মোস্তফা কামাল হামলার বলেন, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে তিনি শুনেছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।


সর্বশেষ সংবাদ