একবার বলেছে গুলি করে মারবে, আরেকবার বলেছে জবাই করবে

  © সংগৃহীত

রাজধানীল গুলশান থেকে নিখোঁজ হওয়া মোহনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মুশফিকুর রহমানকে সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় মুশফিকুরকে পাওয়া যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মুশফিক জানান, সুনামগঞ্জে কীভাবে এলেন, তার কিছু জানেন না। তাঁকে একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে দৌড় দিতে বলা হয়। সাংবাদিক মুশফিকুর ঢাকার মিরপুরে থাকেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চরগোয়ালি গ্রামে।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ ভোরে গোবিন্দপুর এলাকার একটি মসজিদের সামনে যান মুশফিক। সেখানে এক মুসল্লির কাছে কোথায় আছেন, তা জানতে চান। এরপর তাঁর পরিচয় দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে মুশফিকুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

গোবিন্দপুরের স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় লোকজন সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফুয়াদ মনিকে খবর দেন। তিনি সেখানে যাওয়ার পর মুশফিকুর সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফুয়াদ পরে মুঠোফোনে মুশফিকুরকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তিনি খুবই ক্লান্ত ছিলেন, একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

মুশফিকুর বলেন, শনিবার গুলশান এলাকায় তাঁর চোখে কিছু দেওয়া হয়। এরপর তিনি শুধু হেঁটেছেন বলে মনে হয়েছে। একপর্যায়ে তিনি আর কোনো কিছু বুঝতে পারেননি। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন বুঝতে পারেন, তাঁর চোখ ও হাত বাঁধা। কয়েকজন লোক ছিল। তাঁকে কেন ধরে আনা হয়েছে, তা জানতে চান তিনি।

ওই লোকজন তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তিন দিন তাঁকে শুধু একটি কেক ও কিছু পেয়ারা খেতে দেওয়া হয়েছে। ভাত খেতে চাইলে মারধর করা হয়। তাঁকে কয়েকবার মারধর করা হয়েছে। কেন তাঁকে ধরে নেওয়া হয়েছে, তা ওই লোকজন বলেনি। তারা একবার বলেছে, তাঁকে গুলি করে মারবে। আরেকবার বলেছে জবাই করবে।

মুশফিকুর সুনামগঞ্জে কীভাবে এলেন, তার কিছুই বলতে পারেননি। একটি গাড়ি থেকে তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। নামানোর পর তাঁকে দৌড় দিতে বলা হয়েছে। এরপর তিনি দৌড়াতে থাকেন।

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান, মুশফিকুরের শরীরে মারধরের চিহ্ন আছে। শরীরে ব্যথা আছে। চোখে কোনো কিছু দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তিনি ঝাপসা দেখছেন। তবে বিশ্রাম নিলে ঠিক হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকায় মুশফিকুরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঢাকা থেকে লোকজন আসছেন। তাঁরা এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’


সর্বশেষ সংবাদ