গভীর রাতে নয়নের বাড়িতে পুলিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৯, ১০:২৫ AM , আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯, ১২:৪৭ PM
বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যায় স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মিন্নি ও তার বাবাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের নিয়ে যায় পুলিশ। রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডের বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সোমবার গভীর রাতে ওই অভিযান চালানো হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। অভিযানের সময় নয়ন বন্ডের মা সাহিদা বেগম পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, বরগুনা সরকারি কলেজের দেয়াল ঘেঁষেই নয়ন বন্ডের বাসা। নয়নের সঙ্গে ওই বাসাতেই তার মা সাহিদা বেগম বসবাস করতেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই নয়ন বন্ডের মা ওই বাসায় তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র চলে যান। নয়ন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার লাশ গ্রহণ করেন সাহিদার ভাই। নয়নের মা তাঁর ভাইয়ের গৌরীচন্নার বাসায় অবস্থান করছিলেন।
সোমবার রাত ১০টার পর পুলিশের একটি দল নয়নের বাসার সামনে আসেন। তখন নয়ন বন্ডের মা তাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি তালা খুলে দিলে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করেন। ঘণ্টা দেড়েক পর পুলিশ সদস্যরা বাসা থেকে চলে যান। তাঁরা আলামত হিসেবে বেশ কিছু জিনিস নিয়ে যান।
যে কারণে গ্রেফতার মিন্নি: মিন্নিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। এ কারণে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার প্রধান আসামি মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানোর কারণ হিসেবে পুলিশ সুপার আরও বলেন, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে ও অন্যান্য সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তাই রাত ৯টার সময় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যায় জড়িত থাকা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় পুলিশ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করল। তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে কি না প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, মামলার সঠিক তদন্তের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হবে।
একই সময়ে পুলিশ সুপার জেলা বিশেষ শাখা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং সুদীর্ঘ সময়ে পাওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে রাত ৯টায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত এমন তথ্য দিয়ে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ব্যক্তিগত কারণ ও আক্রোশ থেকে এই রোমমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রিফাতের স্ত্রী মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত। এজন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।