মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ের খুনের আসামী আয়েশার পরিচয় ‘অজ্ঞাত’, সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ PM , আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭ PM
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশার পরিচয় এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। মাত্র চার দিন আগে খণ্ডকালীন কর্মী হিসেবে ওই বাসায় কাজ শুরু করা তরুণী হত্যাকাণ্ডের পর বাসা থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যান বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় সোমবার মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
মামলার বাদী আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। এজাহারে তিনি জানান, চার দিন আগে ‘আয়েশা’ তাঁদের বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার সকাল সাতটার দিকে তিনি কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। পরে স্ত্রী লায়লার মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সকাল ১১টার দিকে বাসায় ফেরেন।
বাসায় ঢুকে তিনি দেখেন, স্ত্রী গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। বাসার ফটকের কাছে গুরুতর জখম অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজিজুল জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আসামি বাসায় প্রবেশ করেন। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বের হয়ে যান। তাঁর হাতে ছিল লুট করা একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও আরও কিছু মূল্যবান সামগ্রী।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, তরুণীর কাছে ঘটনার সময় কোনো মোবাইল ফোন ছিল না এবং আশপাশের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল থাকায় পালানোর পথ চিহ্নিত করা কঠিন হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হত্যার মোটিভ এখনও পরিষ্কার নয়। নিহত লায়লার শরীরে ৩০টি এবং নাফিসার শরীরে ৬টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, এলাকায় বহু গৃহকর্মীর কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন বা ন্যূনতম পরিচয়পত্র নেই। এ কারণে সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জেনেভা ক্যাম্প–সংলগ্ন এলাকায় স্বল্পভাড়ায় অনেক তরুণী বাসা ভাড়া নিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করে—তাদের বেশিরই কোনো নথিপত্র নেই।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মা–মেয়ের মরদেহ মঙ্গলবার ভোরে নাটোরের বড়গাছা গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে শোকের ছায়ায় দুপুরে জানাজা শেষে তাঁদের দাফন সম্পন্ন হয়।