মাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ: সেই শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০২:০৪ AM , আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৯ PM
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানার মুজিবনগর ইউনিয়নে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে মাকে মারধরের অভিযোগে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী মা বিবি ফাতেমা। অভিযুক্ত শিক্ষক দম্পতি হলেন—মাকসুদ মোল্লা ও তার স্ত্রী কহিনুর বেগম।
বুধবার (৯ জুলাই) চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বিবি ফাতেমা। বিচারক অনুতোষ চন্দ্র বালা মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের আগামী ২৮ জুলাই আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মাকসুদ মোল্লা শশীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং তার স্ত্রী কহিনুর বেগম একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। মাকসুদ মোল্লা আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং মৃত হারুন মোল্লার ছেলে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছয় সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে মাকসুদ। বাবার মৃত্যুর পর মা সমানভাবে সম্পত্তি ভাগ করে দেন সন্তানদের মাঝে। অন্য তিন ছেলে মায়ের ভরণপোষণে সহযোগিতা করলেও শিক্ষক মাকসুদ বরাবরই তা এড়িয়ে চলেন। বরং বিভিন্ন সময় তিনি সম্পত্তির জন্য মাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন।
আরও পড়ুন: ছেলেকে শিক্ষক বানালাম, এখন তার হাতেই লাঞ্ছিত—মায়ের কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ
সর্বশেষ গত শুক্রবার (৫ জুলাই) মাকসুদ ও তার স্ত্রী বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মুজিবনগরে গিয়ে ছোট ছেলে সফিককে মারধর করে সম্পত্তি দখল করতে চাইলে, মা বিবি ফাতেমা বাধা দেন। এ সময় তাকেও মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অন্য ছেলেরা তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিবি ফাতেমা অভিযোগ করেন, ‘আমার একমাত্র বড় ছেলে মাকসুদকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরির জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি। চাকরি পাওয়ার পর থেকেই সে তার ছোট তিন ভাইকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে আসছে। অথচ সে এখন আমাদেরই ঘরছাড়া করেছে। আট বছর আগে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে আমরা মুজিবনগরের একটি দ্বীপে ছোট ছেলে কৃষক সফিকের আশ্রয়ে যাই। সেখানেও গিয়ে সে তার বাবাকে মারধর করে, যার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান।’
বিবি ফাতেমা বলেন, ‘গত শুক্রবার সকালে আবারও ছেলে মাকসুদ ও তার স্ত্রী কহিনুরসহ বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে সম্পত্তি দখল করতে চায়। সেখানে ছেলে সফিককে মারধর করে, আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও পিটিয়ে আহত করে।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাইনুল ইসলাম নাবিল সরমান জানান, মাকে মারধরের ঘটনায় পিতা মাতার ভরন পোষণ আইনের ৫(১) ও (২) তৎসহ দণ্ড বিধি ৩২৩/৫০৬ (২) ধারায় ছেলে মাকসুদ ও তার স্ত্রী কহিনুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত অভিযুক্ত শিক্ষক দম্পতিকে আগামী ২৮ জুলাই হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার বাদী হয়েছেন বিবি ফাতেমা।