তামিমের পাশে ইশরাকের উপস্থিতি, বিস্মিত আসিফ মাহমুদ

তামিম ইকবালের পাশে দেখা গেল চেনা রাজনৈতিক মুখ ইশরাক হোসেন
তামিম ইকবালের পাশে দেখা গেল চেনা রাজনৈতিক মুখ ইশরাক হোসেন  © সংগৃহীত

দেশের ক্রিকেটে যেন ক্রমশই জমে উঠছে এক নতুন রাজনৈতিক নাট্যকথা। বিসিবির নির্বাচনী লড়াইয়ে যখন উত্তেজনার পারদ চড়ছে, ঠিক তখনই তামিম ইকবালের পাশে দেখা গেল চেনা রাজনৈতিক মুখ ইশরাক হোসেনকে। বিএনপি ঘনিষ্ঠ পরিচিত এই তরুণ রাজনীতিকের উপস্থিতি বিসিবির নির্বাচনকে ঘিরে নতুন প্রশ্নেরও জন্ম দিচ্ছে। নেটিজেনদের একাংশের মন্তব্য, এটি কেবল নির্বাচন নাকি বড় কোনো রাজনৈতিক বার্তা?

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবার বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাকে জায়গা দিতে গিয়ে তার আপন চাচা আকরাম খান এবার নির্বাচন করছেন না। এরই মধ্যে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেনও আকরাম।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার দাবি জানিয়ে আসছেন তামিম। তার অভিযোগ, আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বিজয়ী করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে প্রভাবশালী একটি মহল। যদিও সরাসরি কারোর নাম উল্লেখ করেননি তামিম, কিন্তু তার বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দিকে স্পষ্টতই ইঙ্গিত।

স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তামিম বলেছিলেন, ‘আমি শুধু স্বচ্ছ একটি নির্বাচন চাই, ফলাফল যাই হোক এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। স্বচ্ছ নির্বাচন আমার চাওয়া, জিতি বা হারি তা পরের ব্যাপার।’

অন্যদিকে, তামিমের পাশে ইশরাকের উপস্থিতি দেখে রীতিমতো হতবাক ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় টেলিভিশনে আসিফ স্পষ্ট করেছেন নিজের জায়গাও। তার দাবি, সরকার হস্তক্ষেপ করছে না, বরং রুটিন কাজ করছে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সরকারের রুটিন কার্যক্রমকে যদি হস্তক্ষেপ বলেন, তাহলে... এখানে বুঝতে হবে সরকারের কতটুকু এখতিয়ার আছে। এখতিয়ারের বাইরে যদি কিছু করে তাহলে বলতে পারেন যে অবৈধ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সেটা হলে প্রয়োজনে আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন, প্রয়োজনে আইসিসিকে বলতে পারেন।’

ক্রিকেট যেন রাজনৈতিক শক্তির হাতিয়ার হয়ে না ওঠে—এমন শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।

আসিফের ভাষ্যমতে, তামিমের (ভাই) পক্ষে অপহরণ করা, বুলবুলকে (ভাই) প্রেসিডেন্ট না হতে ফোন করার ব্যাপার দৃষ্টিকটু। আমি তামিমের (ভাই) ফ্যান, কিন্তু তাকে সামনে রেখে একটা দল এসব করছে।

এই প্রেক্ষাপটে বিসিবির নির্বাচন ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন ও কৌতূহলের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রত্যাশা করছেন, রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে উঠে দেশীয় ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচনই হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ৬ অক্টোবর বহুল প্রত্যাশিত বোর্ড পরিচালকদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৪ অক্টোবর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সেটি দুদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’বার সংশোধনের পর কাউন্সিলর মনোনয়নের সময়সীমা ২২ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

হালনাগাদ তফসিল অনুসারে, ২৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৬-২৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হবে এবং ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে। যাচাই-বাছাই এবং প্রাথমিক তালিকা ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে। ১ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন প্রার্থীরা। ওই দিনই প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

৬ অক্টোবর রাজধানীর একটি বড় হোটেলে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং একই দিন সন্ধ্যা ৬টার ফলাফল ঘোষণা করা হবে। সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাত ৯টার মধ্যে ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

মোট ২৫ জন বিসিবি বোর্ড পরিচালক নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে আঞ্চলিক ও জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলরশিপ ক্যাটাগরি থেকে ১০ জন, ঢাকা মেট্রোপলিস ক্লাব প্রতিনিধি ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন এবং ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরি থেকে একজন নির্বাচিত হবেন। বাকি দুই পরিচালককে মনোনীত করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।
সভাপতি পদের জন্য আগ্রহী ব্যক্তিকে প্রথমে বিসিবি পরিচালক নির্বাচিত হতে হবে। বিসিবি পরিচালকরা সভাপতি নির্বাচনের জন্য তাদের ভোট দেবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!