ইতিহাস গড়ে শিরোপা জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা, ফুরাল ২৭ বছরের অপেক্ষা

দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ
দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ   © সংগৃহীত

ক্রিকেটের বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে শিরোপা না জিততে পারার ২৭ বছরের আক্ষেপ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। এবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সেই আক্ষেপ ঘুচাল প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে তারা। এ জয়ে নিজেদের 'চোকার্স' তমকাও কাটাল তারা।

লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৮২ রানের অবিশ্বাস্য এক লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়েছিল প্রোটিয়ারা। আর চতুর্থ দিনে মোটে ৬৯ রান দরকার ছিল, হাতে ছিল ৮ উইকেট। ম্যাচ প্রোটিয়াদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিভীষিকাময় ফাইনালের স্মৃতি স্মরণ করে শঙ্কিত ছিলেন অনেকে। বার্বাডোজে ভারতের সঙ্গে ৩০ বলে ৩০ রানের সহজ সমীকরণ মেলাতে না পারায় শেষমেশ হতাশার গল্প লিখে মাঠ ছেড়েছিল প্রোটিয়ারা। 

তবে এবার হতাশার গল্পের পুনরাবৃত্তি হতে দেননি এইডেন মার্করাম। ইতিহাসগড়া এক সেঞ্চুরিতে পাহাড়সমান লক্ষ্যকে একেবারে মাটিতে নামিয়ে আনেন। অজিদের আগুনঝড়া বোলিংয়ের সামনে একাই প্রতিরোধ গড়েন তিনি। তার অতিমানবীয় ১৩৬ রানের ইনিংসে স্রেফ ইতিহাস লিখল প্রোটিয়ারা।

এর আগে, প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত খেললেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থতার অধ্যায় লেখেন রায়ান রিকেলটন ও উইয়ান মুল্ডার। দলীয় ৯ রানে ওপেনার রিকেলটন এবং ৭০ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুল্ডার (২৭)। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন মার্করাম ও বাভুমা। এই জুটিতে ২১৩ তুলে জয়ের সুবাস নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাঝে অনবদ্য এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ইতিহাসে নাম লেখান মার্করাম।

চতুর্থ দিনে বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি প্রোটিয়া অধিনায়ক। জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে ব্যক্তিগত ৬৬ রান সাজঘরে ফেরেন বাভুমা। অন্যপ্রান্তে ২০৭ বলে ১৩৬ রানের ঝলঝলে এক ইনিংস খেলে মার্করাম বিদায় নিলেও শিরোপা জয়ে শেষমেশ বেগ পেতে হয়নি প্রোটিয়াদের। বেডিংহামের ২১ রানে ভর করে শেষপর্যন্ত ৫ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই জয় শুধু ট্রফিই নয়, প্রোটিয়াদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের এক ঐতিহাসিক মুহূর্তও বটে। এই জয়ে ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মত আইসিসির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জিতল তারা। সেবার নকআউট ট্রফি (বর্তমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর বহুবার সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল খেলেও কেবল হতাশার গল্পই লিখেছে তারা।


সর্বশেষ সংবাদ