তিতুমীর কলেজের ছাত্রীনিবাসে পানি সংকট, প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয় রাতে
- মো. আল আমিন মৃধা, সরকারি তিতুমীর কলেজ
- প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৯ AM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৪ PM
রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে অবস্থিত সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্রী হোস্টেল সিরাজ ছাত্রীনিবাসে দিনের বেশির ভাগ সময় পানি থাকে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ২৪০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী। দিনের বেলায় পানির সংকট এতটাই প্রকট যে, বাধ্য হয়ে রাতে গোসলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে হচ্ছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি না থাকায় খাবার পানি সংগ্রহ ও টয়লেটের মতো জরুরি প্রয়োজনেও বিপদে পড়ছেন তারা। অনেকে দুপুরে পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে গোসলের জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যা চললেও গত সপ্তাহ থেকে এটি তীব্র আকার ধারণ করেছে। সকালে একবার পানি আসে, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আবার চলে যায়। বিকেলেও কিছু সময়ের জন্য পানি এসে চলে যায়, এরপর রাতে আসে। তীব্র গরমে কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হওয়ার মতো পানিও পাওয়া যায় না। খাবার পানির সংকট তো আছেই।
সুমাইয়া ইসলাম নামে এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পানির সমস্যা অনেক দিন ধরেই চলছে। এই প্রচণ্ড গরমে কলেজ থেকে বাসায় ফিরে দেখি পানি নেই। খাওয়ার পানির সমস্যা, গোসলেরও সমস্যা। পানি ছাড়া কি চলা যায়? এখন এত গরম, কলেজ থেকে এসে হাত-মুখ ধোয়ার মতো পানিও পাই না। আসার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায়। না পাই খাবার পানি, না পারি গোসল করতে।’
দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যা চললেও গত সপ্তাহ থেকে এটি তীব্র আকার ধারণ করেছে। সকালে একবার পানি আসে, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আবার চলে যায়। বিকেলেও কিছু সময়ের জন্য পানি এসে চলে যায়, এরপর রাতে আসে। তীব্র গরমে কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হওয়ার মতো পানিও পাওয়া যায় না। খাবার পানির সংকট তো আছেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পানির অনেক সমস্যা। সকালে এক-দুই ঘণ্টা থাকে, তারপর চলে যায়। আবার বিকেল ৪টায় আসে, তখনও একই অবস্থা থাকে। এরপর রাতে আবার আসে। গোসলের জন্য সিরিয়াল দিতে হয়; পানি শেষ হয়ে গেলে রাতে গোসল করতে হয়। এভাবে কি চলা যায়?’
ছাত্রীনিবাসে পানির সংকটের বিষয় জানতে চাইলে সিরাজ ছাত্রী নিবাসের তত্ত্বাবধায়ক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আক্তার জাহান বলেন, ‘ছাত্রীনিবাসে পানির সমস্যা অনেক আগ থেকেই চলছে। হলটি গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাধীন হওয়ায় আমরা ইচ্ছা করলেও সরাসরি নতুন পানির লাইন বসাতে পারি না।’
তিনি বলেন, হলের ভেতরে পানির পাম্প থাকলেও ওয়াসার লাইনে পানি আসছে না। এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ওয়াসার সঙ্গে কথা বলেছে। তারা পরীক্ষা করে জানিয়েছে, পানির লাইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন। হলটি অনেক পুরোনো হওয়ায় পানির লাইন পরিবর্তনের জন্য প্রায় ৩ লাখ টাকার বাজেট প্রয়োজন। বাজেট না আসা পর্যন্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
আরো পড়ুন: ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসে নবীন শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দে জটিলতা, সংকট নীতিমালায়
পানির সংকটের পেছনে বিল সংক্রান্ত কোনো সমস্যা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিল সংক্রান্ত কিছু বিষয় রয়েছে। তবে বিলের সমস্যা হলে ওয়াসা সরাসরি লাইন কেটে দিতো। মূল সমস্যা হচ্ছে পুরোনো লাইনের ত্রুটি। এটি ঠিক করা গেলে পানির সংকটের সমাধান হবে।
যদিও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমেদ দাবি করেছেন, সিরাজ ছাত্রীনিবাসে ২০২১ সাল থেকে পানির বিল বাকি থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে।
হলের পানির সংকটে বিষয়ে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী শফিক বলেন, সরবরাহ লাইনে ময়লা জমে যাওয়ায় ট্যাংকিতে পানি পৌঁছাচ্ছিল না। কিছুদিন আগে ময়লা পরিষ্কার করা হলেও সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। যতটুকু পানি ট্যাংকিতে আসে, তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। ফলে সংকট থেকেই যায়।
সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে নতুন লাইন স্থাপন প্রয়োজন। বাজেট সংক্রান্ত একটি বিষয় আছে। পাশাপাশি ওয়াসার কাছ থেকে রিকানেকশন নিতে হবে।