এখন কান্না ছাড়া আর উপায় নাই, বললেন খাগড়াছড়ির সেই ছাত্রীর বাবা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৫ PM , আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২১ PM
‘‘কালকে ওসি সাব আইসা বলছে, তোমাদের রিপোর্টটা তো নেগেটিভ। তখন ওসি সাব বললো কোর্টে আপিল করে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারো। কিন্তু আমরাতো বিচার চাইতেছি’’, আজ বৃহস্পতিবার বলছিলেন খাগড়াছড়ির গুঁইমারায় ধর্ষণের অভিযোগ তোলা স্কুলছাত্রীর বাবা। খবর বিবিসি বাংলার।
ওই স্কুলছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জমা দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। ওই স্কুলছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, পুলিশের কাছ থেকে এই প্রতিবেদনের খবর পান তারা। ধর্ষণের ‘আলামত না পাওয়ার’ বিষয়টি পুলিশই তাদের জানিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এখন আইন-আদালত করেও সঠিক প্রতিবেদন পাবেন না মনে করেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা। তিনি বলেন, এখন আমি যদি কোর্টে আপিল করি, ওখানে গেলেও রিপোর্টটা পাবো না তো। এতোগুলা টাকা খরচ করে ওখানে যদি নেগেটিভ পাই, তাই ওখানে যাইয়া আর কি করবো, কোনো লাভও নাই।
এখন তাহলে কী করবেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন কী ভাববো, এখন খালি বাড়িতে বইসা বইসা কান্না-কাটি। চোখের ঘুম নাই, এমন অবস্থায় আছি আর কি!
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়ির সেই ছাত্রীর শরীরে ধর্ষণের আলামত মেলেনি: সিভিল সার্জন
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, মেডিকেল রিপোর্টের বিষয়ে কিশোরীর পরিবারকে জানানো হয়েছে। যদি এ ব্যাপারে তাদের কোনো বক্তব্য থাকে বা তারা আবারো পরীক্ষা করাতে চায়, সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব তারা যাতে আদালতে আবেদন করেন সেটা বলেছেন তিনি।
এদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে বিচার দাবি করে কর্মসূচি পালন করা পাহাড়িদের প্ল্যাটফর্ম 'জুম্ম ছাত্র জনতা' এই স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে। এর কারণ উল্লেখ করে প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র কৃপায়ন মিত্র বলেন, ধর্ষণের আলামত মুছে ফেলার অতীত নজির রয়েছে।
এ ঘটনায়ও এমন কিছু হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তারা প্রশাসনের সাথে গতকাল বুধবার বৈঠক করেছেন। আগামী রবিবার পরবর্তী বৈঠকের পর অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ধর্ষণের আলামত সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ আছে কিনা–এই প্রশ্ন করলে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ছাবের।
ধর্ষণের অভিযোগে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র জনতার ডাকা অবরোধ গতকাল বুধবার প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় খাগড়াছড়ি শহরের সড়কগুলোয় এখনো মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে।
ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে অবরোধ এবং হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যার অভিযোগও রয়েছে।
মামলা তিনটির মধ্যে একটি খাগড়াছড়ি সদর থানায় এবং অন্য দুইটি গুঁইমারা থানায় দায়ের করা হয়েছে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, ‘সদর থানায় ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগে গতকালকে একটি মামলা হয়েছে। আর ওখানে গুঁইমারা থানায় দুইটা মামলা হয়েছে। ৩০২ ধারায় একটা মামলা, যেহেতু ওইখানে তিন জন খুন হয়েছে।