পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পাস, হাত না থাকায় তিন বছর ঘুরেও এনআইডি মেলেনি জসিমের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪৬ PM
জন্ম থেকে দুই হাত নেই, আঙুলের ছাপ দিতে না পারায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাচ্ছেন না ফরিদপুরের নগরকান্দার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জসিম মাতুব্বর (২৬)। এতে সরকারি-বেসরকারি সেবা, শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনের নানা কাজে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।
জসিম ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনা, পরীক্ষা, এমনকি ব্যবসায়িক কাজ সবই করছেন পা দিয়ে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর এখন স্নাতক পর্যায়ে পড়ছেন, পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন ফল ও সবজির ছোটখাটো ব্যবসা। কিন্তু শুধুমাত্র এনআইডি না থাকায় থমকে যাচ্ছে তার অনেক প্রয়াস।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তামলা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের বাসিন্দা জসিম মাতুব্বর। বাবা হানিফ মাতুব্বর ও মা তসিরণ বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়।
জসিম বলেন, ‘এখন আমি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। অনেক সময় কলেজের কাজ, আবার সরকারি বা বেসরকারি নানা সেবার জন্য এনআইডি প্রয়োজন হয়। ২০২৩ সাল থেকে নির্বাচন অফিসে ঘুরছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তারা অনলাইনে আবেদন করতে বলেছিল, আমি কয়েকবার করেছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন আর যাই না, হাল ছেড়ে দিয়েছি।’
জসিমের মা–বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিজের জন্মনিবন্ধন থাকলেও শুধুমাত্র হাত না থাকায় আঙুলের ছাপ দিতে না পারায় এনআইডি পাচ্ছেন না তিনি।
এনআইডি না থাকায় রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হওয়ার কষ্টের কথা জানিয়ে জসিম বলেন, ‘হাত নেই বলে আঙুলের ছাপ দিতে পারছি না। এ কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাওন সাগর বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। যেহেতু ছেলেটির শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তাই তার জাতীয় পরিচয়পত্র করে দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। যাঁদের দুই হাত নেই, তাঁদের এনআইডি প্রদানে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। ইতিমধ্যে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। জসিম মাতুব্বরকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি উপজেলা পরিষদে এলে তাঁর এনআইডি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’