মাদ্রাসার সুপারকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মানববন্ধন
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২০ PM
পাবনার চাটমোহরে সামাদ সওদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সাময়িক বহিষ্কৃত সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল ওয়াহহাবকে স্থায়ী বরখাস্ত ও অপসারণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে মাদ্রাসার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
পরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শতাধিক অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্টার প্রফেসর ছালেহ আহমাদ তার দপ্তরের বামাশিবো/প্রশা/পাবনা-১২৬/৮৮ নং স্মারকপত্রে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাদ্রাাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার আব্দুল ওয়াহহাবকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দেন।
এরপরই ফুঁসে ওঠেন ওই মাদ্রাসার অভিভাবক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষ। এর আগে ২০১৭ সালে নৈতিকস্থলন ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন আব্দুল ওয়াহহাব।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অভিভাবক সাইদুল ইসলাম, কুতুব উদ্দিন, রবিউল করিম গোলাম, আব্দুল মোতালিব, হাসানুজ্জামান সবুজ, ছাত্র প্রতিনিধি ভি.ই ক্যাস্ট্রো সাগর, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, সাদিয়া খাতুন, সিনথিয়া খাতুন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর যোগদানের পর থেকে মো. আব্দুল ওয়াহহাব নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন, নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন এবং প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
মানববন্ধনে সিনথিয়া, সাদিয়া নামের দুই শিক্ষার্থী বলে, আবদুল ওয়াহহাব স্যার প্রতিষ্ঠানে অনেক অনিয়ম করেছেন। এই মাদ্রাসায় ওয়াহহাব স্যার যোগদান করলে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে আর পড়ব না। আমাদের অভিভাবকরাও পড়াবে না।’
অভিভাবকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত এমন সুপার আবারও যোগদান করলে আমরা আমাদের সন্তানকে পড়াব না। তার চারিত্রিক অবক্ষয়ের কারণে আবদুল ওয়াহহাবকে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু তিনি প্রভাব খাটিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে আবারো মাদ্রাসায় যোগদানের পাঁয়তারা শুরু করেছেন। আমরা আবদুল ওয়াহহাবকে স্থায়ী বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল ওয়াহহাব বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাচ্ছি না। ওরা যা পারে করুক, মানববন্ধন করুক, স্মারকলিপি দিক, যা ভালো মনে করে করুক, যত পারে লেখুক। আমি আর এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।’
জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘স্মারকলিপি পেয়েছি। বিস্তারিত জানা নেই। পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’