ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন  © টিডিসি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে বিজয়নগর। আজ বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকে উপজেলার চান্দুরা এলাকায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন হাজারো মানুষ। এতে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।

অবরোধে চান্দুরা, হরষপুর ও বুধন্তি ইউনিয়নের বাসিন্দারা অংশ নেন। তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের ১০ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনবিরোধী। বহু বছর ধরে এসব ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত হলেও হঠাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনে যুক্ত করা হয়েছে, যা জনগণের মতামতের পরিপন্থি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিজয়নগরের উন্নয়ন বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একবার সদর, একবার সরাইল, আবার কখনো নাসিরনগরের সঙ্গে যুক্ত করে আমাদের অবহেলার শিকার বানানো হয়েছে। আমরা চাই বিজয়নগরকে একক সংসদীয় আসন হিসেবে ঘোষণা করা হোক অথবা আগের আসনে ফেরত আনা হোক। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

এ সময় বক্তারা জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে প্রায় ৯৬ হাজার ভোটার আছেন, যা মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক। দুই লক্ষাধিক ভোটারবিশিষ্ট এই উপজেলা একক আসনের যোগ্য হলেও বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে এখানকার মানুষ বঞ্চিত হয়ে আসছে।

চান্দুরা বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল খালেক বলেন, ‘আমরা এর আগে আন্দোলন করেছি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন আমাদের কথা শোনেনি। প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে নামব।’

আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা কারাগারে

স্থানীয় কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সদর-বিজয়নগরের ভোটার। আমাদের অন্য আসনে দেওয়া হলে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয় ক্ষুণ্ণ হবে।’

অবরোধে আটকে পড়া চালক আনোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পণ্য পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। ক্ষতির মুখে পড়ছি।’ 

ঢাকা থেকে আসা যাত্রীবাহী বাসচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে আটকে আছি, যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে।’

বিক্ষোভে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, এনসিপি ও স্থানীয় জনগণ অংশ নেন। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বিজয়নগরের সেক্রেটারি মাওলানা আফজাল হোসেন, জামায়াত নেতা শিহাব উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক শিহাব সিদ্দিকী, মুফতি এনামুল হক ভাসারী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা জাবেদুর রহমান জাবেদ, বিএনপি নেতা লিটনসহ অনেকে।

বক্তারা নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন দ্রুত সংশোধনের দাবি জানিয়ে বলেন, আগামী ২৪ আগস্টের মধ্যে যদি অবিভক্ত বিজয়নগর আসন পুনর্বহাল না করা হয়, তবে লাগাতার কর্মসূচি ও আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ