হাসপাতালের নতুন ভবন হস্তান্তরে গড়িমসি, ভোগান্তিতে রোগীরা

পিরোজপুর সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন  © টিডিসি ফটো

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ১০০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি থাকে তিনগুণ বেশি। ফলে নতুন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও এখনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি গণপূর্ত বিভাগ। এতে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেয় তৎকালীন সরকার। দরপত্র আহ্বানের পর শুরু হয় ৭তলা ভবনের নির্মাণ কাজ। প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেসার্স খান বিল্ডার্স ও বঙ্গ বিল্ডার্স লিমিটেড নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর সদর হাসপাতালের নতুন ভবনটি নির্মাণ করে।

২০২০-এর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৩ দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হয়। তবে পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো হাসপাতালটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এতে জেলার কয়েক লাখ মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে  ১০০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি থাকে দুই থেকে তিন গুন বেশি। প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসাপাতালে বেড না পেয়ে মেঝেতে এবং বারান্দায় নিচ্ছেন চিকিৎসা। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

আরও পড়ুন: বর্ষার আগেই কুড়িগ্রামে নদী ভাঙন শুরু, দিশেহারা কৃষকরা

এ ছাড়াও হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যোগদান করলেও অল্প দিনের মধ্যেই বদলি হয়ে চলে যান। আবার জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি হতে না হতেই তাকে খুলনা-বরিশাল বা ঢাকায় রেফার করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকরা।

পিরোজপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুর্শিদ শেখ বলেন, ‘জেলা হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ হলেও এখনো চালু না হওয়ায় আমরা ভোগান্তিতে পড়ছি। রোগী নিয়ে আসলেই বরিশাল, খুলনা অথবা ঢাকায় রেফার করা হয়। কয়েক মাস আগে আমার আম্মাকে নিয়ে আসলে, সামান্য চিকিৎসা দিয়েই খুলনায় রেফার করা হয়েছিল। আমরা দ্রুত জেলা হাসপাতালটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে পিরোজপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণে হস্তান্তরে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে আশা করছি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে। ইতোমধ্যে লিফটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’

রোগীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন হাসপাতালটির সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগী প্রতিনিয়ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। আমাদের সামর্থ অনুযায়ী সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। নতুন ভবনটি দ্রুত হস্তান্তর করা হলে, সেবার মান আরও বাড়বে এবং ভোগান্তিও কমে আসবে।’


সর্বশেষ সংবাদ