মাগুরায় শিশুটির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

জানাজার ময়দান
জানাজার ময়দান  © সংগৃহীত

মাগুরায় অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির মরদেহ সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হেলিকপ্টারটি মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। পরে সন্ধ্যা সাতটায় শহরের নোমানী ময়দানে শিশুটির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

শিশুটির মরদেহের সঙ্গে হেলিকপ্টারে শিশুটির মা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মাগুরায় যান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘এটা রাষ্ট্র বা সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখছে। এত ছোট্ট একটা মেয়ের ধর্ষিত হওয়া মেনে নেওয়া যায় না, এটা কারও জন্য মেনে নেওয়া যায় না। শিশুটি আমাদেরই মেয়ে। কাজেই আমরা সেভাবেই দেখছি।’ 

সন্ধ্যায় প্রায় একই সময়ে আলাদা একটি হেলিকপ্টারে মাগুরায় আসেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।  

নোমানী ময়দানে জানাজা শেষে শিশুটির মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।  

এর আগে দুপুর ১টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।  

সিএমএইচের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ জানান, আজ সকালে দুই দফায় শিশুটির ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরলেও দুপুর ১২টায় আবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এই দফায় সিপিআর দেওয়ার পরও হৃৎস্পন্দন ফেরেনি। দুপুর ১টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল সে। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি।  

পরিবারের সদস্যরা জানায়, শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেদিনই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে আরও অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরে গত শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (পিআইসিইউ) থেকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। 

শিশুটির মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে শ্রীপুর উপজেলায় তার বাড়িতে স্বজন ও এলাকাবাসী ভিড় করেন। তাঁরা দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।  

শিশুটির বাবা মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তিনি চুপচাপ হাঁটাহাঁটি করছেন, কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।  

শিশুটির চাচা (বাবার ফুফাতো ভাই) বলেন, ‘আজ দুপুরে আমরা মৃত্যুর খবর পাই। এলাকার গোরস্থানে দাফনের জন্য কবর খোঁড়ার কাজ চলছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’


সর্বশেষ সংবাদ