বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের ছাদ বাগানে ২৩৫ প্রজাতির জবা ফুল গাছ

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের ছাদ বাগানে ২৩৫ প্রজাতির জবা
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের ছাদ বাগানে ২৩৫ প্রজাতির জবা  © টিডিসি ফটো

কর্মব্যস্ততায় মগ্ন নগরীর মানুষের কাছে ছাদ বাগান সতেজতার পরিচয় বহন করে। প্রত্যেকেরই সুযোগ থাকে এই ব্যস্ত নগরীতে পরিবেশের জন্য ভালো কিছু উপহার দেওয়ার। বাসাবাড়ির পরিত্যাক্ত জায়গায় অথবা ছাদ বাগান গাছ রোপন করে সেই সুযোগ কাজে লাগারো যেকে পারে। সৌন্দর্য প্রিয়াসী ব্যক্তি হলেই এসব জায়গায় সুন্দর বাগান করা সম্ভব। নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশি-বিদেশী থেকে ২৩৫ প্রজাতির জবার গাছ রোপণ করে এমন বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহানারা বেগম। প্রতিদিনই বাহারি রং-বেরঙের সে ফুলগুলো ফুটছে তার সেই ছাদ বাগানে।

ড. শাহানারা কৃষি অনুষদের ১৯৯২-৯৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অনার্স শেষ করে মাস্টার্স চলাকালীন সময়ে ২০০১ সালে বাকৃবিতে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন এই অধ্যাপক। টোকিও ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি থেকেও অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি।

জবা চাষে আগ্রহ সৃষ্টি
জবা ফুলের প্রতি আগ্রহ হঠাৎ করে জন্মেছিলো ড. শাহানারা বেগমের। জবা ফুলের ২৩৫ ধরনের প্রজাতি হতে পারে সেই সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না। ‘এসো বাগান করি’ ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে প্রথম জবা ফুল আকৃষ্ট করে। সেখানে জবা ফুলের বিভিন্ন ধরনের রং, ধরণ থেকে ভালো লাগা শুরু তার। মূলত করোনাকালে ছাদ বাগানকারীদের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে করোনার ভিতরে বাড়িতে অলস বসে থাকার সময় ছাদ বাগানের কাজ শুরু করা হয়। অনেকের কাছে বিরল প্রজাতির জবার গাছ রয়েছে। তবে ২৩৫ প্রজাতির জবার গাছ বাংলাদেশে সম্ভবত অন্য কারো কাছে নেই।

যেভাবে শুরু
অধ্যাপকের নিজের উদ্যেগে জবা ফুলের বাগান করা। জবা ফুলের নতুন নতুন প্রজাতি সংগ্রহ শুরু হয় করোনা যখন পরিস্থিতি শীতল হলে। প্রথমে বাকৃবি ক্যাম্পাসের আশেপাশের নার্সারি থেকে ফুলের প্রজাতি সংগ্রহ শুরু করেন। একদম শুরুতে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের পাশের নার্সারি থেকে গাছ ক্রয় করেন। এরপর আস্তে আস্তে সারা বাংলাদেশ থেকে ফুলের চারা সংগ্রহ করতে থাকেন। বর্তমানে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ির আবিদুল ইসলামের নার্সারি ও বগুড়ার ইসলামুল হকের কাছ থেকে জবা ফুলের সংগ্রহ চলমান। অনলাইন-অফলাইন দুই পদ্ধতিতে ফুল সংগ্রহ করা হয়। এরপর সাভারের হাসান হাওলাদারের কাছ থেকে ফুলের চারা সংগ্রহ করি।

আরও পড়ুন: ফুলের সুবাস নিতে ঢাবির হলে হলে বাগান করবে ছাত্রলীগ

এছাড়াও অধ্যাপকের স্বামী অধ্যাপক ড. মো আজহারুল ইসলাম একজন অধ্যাপক ও গবেষক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজে কিংবা ভ্রমণে গেলে সেখান থেকে জবা ফুলের প্রজাতি সংগ্রহ করে নিয়ে আসে বাগানের জন্য।

ছাদ বাগান ফুল দেখার অনুভূতি
ড. শাহানারা বলেন, জবা ফুল দেখতে খুবই ভালো লাগে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার পর নতুন ফুল দেখার অপেক্ষায় থাকা হয়। একেক দিন একেক ধরণের ফুল ফুটতে দেখা যায়। আবসর সময়ে ফুলের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত থাকা হয়। দিনে সকাল-বিকাল ফুলের পিছনে সময় দেওয়া হয়। দিনের অন্যান্য সময় ক্যাম্পাসে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজে সময় ব্যয় করার কারনে বিকালের সময়ে ছাদ বাগান সময় দেওয়া হয়।

অধ্যাপক বলেন, জবা একদিনের ফুল। সকালে ফুটলে বিকালে ফুলের জীবন শেষ হয়ে যায়। সব ফুল এক ফোটে না। একেক দিন একেক প্রজাতির জবার ফুল ফুটে থাকে। জবা ফুল দুই দিন বা তিন দিন বেঁচে না থাকার কারণে সব ফুল একসঙ্গে দেখা যায় না। কয়েকদিন জবা ফুল টিকে থাকলে  একসঙ্গে অনেক ফুল দেখা যেত। অন্যদিকে ফুলের সব ফুল একসঙ্গে দেখা যায় না। আবহাওয়ার তারতম্যের উপর জবা ফুল ফোটা অনেকাংশ নির্ভর করে। অতিবৃষ্টি ও শীতল বৃষ্টির সময়ে কম সংখ্যক গাছে ফুল ফুটতে দেখা যায়। আবহাওয়া ভালো অথবা খারাপের জন্য জবা ফুল কম-বেশি ফুটতে দেখা যায়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. শাহানারা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নিজের ভালোলাগা থেকে জবা ফুল চাষ করা। এই বাগানটি আমার অবসরের শান্তির জায়গা। যতদিন সুস্থ থাকবো ততদিন আরো অনেক জবা ফুলের প্রজাতি সংগ্রহ করতেই থাকবো। শুধু একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির গাছ নিয়ে কাজ করতে চাই সেটি হচ্ছে জবা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রজাতির জবা সংগ্রহ করে আমার বাগানে রাখতে  চাই এটাই আমার পরিকল্পনা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence