মেডিকেল ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকরা

ভর্তি পরীক্ষার্থী
ভর্তি পরীক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাননি। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই শেষ হলেও এখনও ভর্তির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পাননি তারা। ফলে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষায় করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

গত ১৯ জানুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা কম নম্বর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের সনদ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জনের যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে নির্বাচিত ৭৭ জনকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে ভর্তি করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জনের মধ্যে ১৫৮ জন সনদ জমা দিয়েছিলেন। 

তাদের মধ্যে ৭৭ জনকে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে আগেই। সনদ জমা না দেওয়া ৩৫ জনসহ মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদের ভর্তি বাতিল হতে পারে। ভর্তি নীতিমালায় ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকার কথা জানানো হয়েছিল। ৭৭ ভর্তি হলে এ কোটার বাকি আসন মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে।

গত কয়েকদিনে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি নিয়ে তারা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাননি। ফলে এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলে তারা ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি উত্তীর্ণ হলেও কী করতে হবে, তা জানেন না। ইতোমধ্যে সরকারি মেডিকেল মাইগ্রেশন ও অপেক্ষমান থেকে ভর্তি শুরু হয়েছে। তারা ভর্তির বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।

জানা গেছে, কোটার কোনো আসন শূন্য থাকলে মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম দফায় মাইগ্রেশন এবং অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১৭৩ জনের এ তালিকা থেকে গত বৃহস্পতিবার ভর্তি শুরু হয়েছে, যা চলবে ১২ মার্চ পর্যন্ত।

আজ শনিবার (৮ মার্চ) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কোটায় যেসব আসন শূন্য ছিল, সেগুলো মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মাইগ্রেশন ও অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হয়েছে। তবে যাচাইয়ে পাওয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৭৭ জনের আসন শূন্য রাখা হয়েছে।

তিনি বলেনন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এর মধ্যে যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, তারা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন। উপদেষ্টা পরিষদ বা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে ভর্তি করা হবে।

আরো পড়ুন: মেডিকেলে ভর্তি: কোটার শূন্য আসন পূরণ হচ্ছে মেধাতালিকা থেকে

এর আগে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মেডিকেলে কোটায় উত্তীর্ণদের সনদ যাচাই শেষে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রথম দফায় মাইগ্রেশন এবং অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করার কথা জানানো হয়।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রকাশিত ফলাফলে ৫ হাজার ৩৮০ পরীক্ষার্থী ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৩ জন মুক্তিযোদ্ধার কোটায় ও ৩৪৮ জন পশ্চাৎপদ জাতিগোষ্ঠী কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

এ বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছেন ৬০ হাজার ৯৫ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজের ৫ হাজার ৩৮০টি আসনে এবং ৬৭টি অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৬ হাজার ২৯৩টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ