গুচ্ছে বিশেষ মেরিট চেয়ে মাভাবিপ্রবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি
- মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ PM , আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১২ PM
গুচ্ছ অধিভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মাইগ্রেশন বন্ধ করে ও সাবজেক্ট মাইগ্রেশন চালু রেখে অতি দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফাঁকা আসন পূরণ করার লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা গুচ্ছের আহ্বায়ক ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আখন্দের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা দুইটায় মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উপাচার্যের কার্যালয়ে এসে তারা এ স্মারকলিপি দেন এবং তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত ভর্তির পর সাধারণ আসন ফাঁকা এবং কোটার বরাদ্দ আসন সাধারণ শিক্ষার্থী দ্বারা পূরণ না করে কার্যক্রম বন্ধ করা এক প্রকার চরম বৈষম্য এবং অবিচার করার শামিল। গতবারের মতো বিশেষ মেরিট প্রদান না করলে এবং কোটার আসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা পূরণ না করলে প্রচুর ফাঁকা আসন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রায় ৭-৮ মাসের অধিক সময় ধরে গুচ্ছের মেরিট মাইগ্রেশন চলমান এবং স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই মাস ধরে ক্লাস পরীক্ষা চলছে।
আরও পড়ুন: ভর্তি পরীক্ষার তিন গুচ্ছে ভাঙনের গুঞ্জন, যা বলছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান
এতে বলা হয়, অপেক্ষমাণ থাকা শিক্ষার্থীরা একধরনের হতাশার ভেতরে সময় পার করছেন। যেহেতু কৃষি গুচ্ছের চূড়ান্ত ভর্তির পর অনেক আসন ফাঁকা হবে বা হচ্ছে, তাই উপাচার্যের কাছে তাদের আবেদন, এই ফাঁকা আসনগুলো অতি দ্রুত পূরণের লক্ষ্যে অ্যাভেলেবেল ফর সিলেকশন প্রদ্ধতিতে ভার্সিটি মাইগ্রেশন বন্ধ করে গতবারের মতো শুধু সাবজেক্ট মাইগ্রেশন অথবা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফাঁকা আসন পূরণ করা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কোটায় থাকা ফাঁকা আসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় করে বিশেষ মেরিট প্রকাশ করতে হবে। কেননা, প্রতিবছর দেখা যায় বহু আসন কোটার ফাঁকা থেকে যায় যা নষ্ট হয়ে যায়।
স্মারকলিপি জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে জয়শ্রী রাহা বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আমাদের জানিয়েছে, সিট ফাঁকা আছে কিন্তু আর মেধা তালিকা দেওয়া যাবে না , সামনে সেমিস্টার পরীক্ষা।’
আরও পড়ুন: একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যাওয়ার গুঞ্জনে গুচ্ছে ভাঙনের শঙ্কা, দ্বিধায় নতুন উপাচার্যরা
তিনি আরও বলেন, ‘এসব দায়ভার তো আমরা সাধারণ ওয়েটিং এ থাকা শিক্ষার্থীরা নিতে পারি না। ওনাদের হাতে অপশন আছে চাইলে ১ সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত কার্যক্রম শেষ করতে পারে। ওনারা অ্যাভেলেবেল ফর সিলেকশন বা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফাঁকা আসন দ্রুত পূর্ণ করতে পারেন। আমাদের একটা সুযোগ দেওয়া হোক, এতে অনেকের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হবে।’
সাদিয়া আক্তার নামের আরেকজন বলেন, ‘জিএসটি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নোটিশ দিয়েছিল যে কৃষি গুচ্ছের চূড়ান্ত ভর্তির পর জিএসটি শেষ একটা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ফাঁকা আসন পূরণ করবে। এই ফাঁকা আসনগুলো শিক্ষার্থীদের অধিকার। ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে তারা এই আসনগুলো পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। যেহেতু অনেক সময় ইতোমধ্যে চলে গেছে ,সেই সাথে জিএসটি তে চান্স প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ায় কার্যক্রম দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাই দ্রুত কার্যক্রম শেষ করতে ও শূন্য আসনগুলো পূরণ করতে গত বছরের মতো বিশেষ মেরিট তথা অ্যাভেলেবেল ফর সিলেকশন কার্যকর করা উচিত বলে মনে করি ‘
আরও পড়ুন: হলে ঢুকে সিনিয়রকে মারধর, হাবিপ্রবিতে বহিষ্কার ২
রাইসুল ইসলাম বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অনেক সিট ফাঁকা আছে, এতে নতুনভাবে ভর্তি হতে পারবে অনেক শিক্ষার্থী। কিন্তু তারা যদি ফাঁকা আসন পূরণ না করেই কার্যক্রম স্থগিত করে। তাহলে ওয়েটিং থাকায় আমরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে হবো এবং চরম অন্যায় করা হবে। এ েজন্য খুব শিগগির অ্যাভেলেবেল ফর সিলেকশন এবং ভার্সিটি মাইগ্রেশন অফ করার মাধ্যমে ওয়েটিং এ থাকা স্টুডেন্টদের নিয়ে একটা মেরিট দেওয়ার দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, ‘গুচ্ছের যিনি আহ্বায়ক তিনি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন। একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যে শেষ মিটিং করেছিলাম, ওই মিটিংয়ে ষষ্ঠবারের কার্যক্রম করেছি। এর আগে পঞ্চম পর্যন্ত শেষ হয়েছিল। এর মধ্যে কৃষি গুচ্ছ হয়েছে, সেখানে অনেকে চলে গিয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অক্টোবরের ২০ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু করেছি। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো ক্লাস শুরু করতে সপ্তাহখানে দেরি করেছে। ২০-২৮ অক্টোবরের মধ্যে মোটামুটি সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরু করেছে। এটা ডিসেম্বর মাস আমাদের ছয় মাসে সেমিস্টার। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মিড টার্ম পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে, কারও কারও হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের আয়োজনে ঢাকা ক্লাবে ভিসি সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গত মিটিংয়ে প্রত্যেক ভিসি মহোদয় মতামত দিয়েছেন, ষষ্ঠবারের পর আর কোনো সুযোগ নেই। কারণ, তারা নতুন ভর্তি হলে মানিয়ে নিতে পারবে না। কারণ, মিড টার্মগুলো হয়ে যাবে, ক্লাস কারও কারও ৫০ শতাংশ হয়ে গেছে।’
ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে ফাস্ট ইয়ারে এসে একটা ধাক্কা খাবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় রাজি হয়নি সপ্তম মেধাতালিকা প্রকাশ করার। কোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বা আহ্বায়ক একক সিদ্ধান্তে এটি করতে পারবে না। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় রাজি না হলে এটি করা সম্ভব নয়।’