মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্য চান না মানোন্নয়নের শিক্ষার্থীরা, দুই দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ PM , আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ PM
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দাবি করেছেন মানোন্নয়ন ও অনিয়মিত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা। স্মারকলিপিতে তারা তাদের দুই দফা দাবি তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার মানোন্নয়ন ও অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফারহান শাহরিয়ার নাঈম, মাইমুনা আক্তার হিরা, রাফিয়া সুলতানা, আহনাফ সাবিদ, মোহনা আরিয়ানা রিসা, নুসরাত জাহান নিতু, মোহাম্মদ রিয়াদ হাসান রুমান, জান্নাতুল নাঈম, মারুফা ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস, ফারহানা আক্তার পলি এবং রওজাতুল জান্নাত এ স্মারকলিপি জমা দেন।
শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবি হলো- ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার ন্যায্য অধিকার আদায়ের সুযোগ দিতে হবে। ২০২১ সাল পর্যন্ত অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন যেভাবে ফাস্ট টাইমার হিসেবে বিবেচনা করে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হতো, আমরাও যেন সেই সুযোগ পাই সেটি নিশ্চিত করা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা জানান, ‘মেডিকেল ভর্তি নীতিমালা ২০২৩-২৪ অনুযায়ী, এইচএসসিতে এক বছরের গ্যাপ থাকলে (অনিয়মিত) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে না। প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বর পেতে হবে। আর্মড ফোর্সেস এবং আর্মি মেডিকেল কলেজেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মাঝে ২ বছরের বেশি গ্যাপ থাকা যাবে না। এমনকি, AFMC ও AMC তে পড়ার জন্যও এসএসসি ও এইচএসসি তে পরিক্ষার মাঝখানে ২ বছরের বেশি গ্যাপ থাকা যাবে না। ফলে একজন শিক্ষার্থীর ২ বছরের চেয়ে বেশি বিরতি হয়ে যায়, তবে সে আর ডাক্তার হতে পারবে না।
তারা বলেন, এইচএসসির পর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে গ্যাপ নিয়ে কোনো নিয়ম নেই। বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), প্রকৌশলের গুচ্ছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জিএসটি গুচ্ছ, বিইউপি, কৃষি গুচ্ছসহ দেশের যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের গ্যাপ নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। একজন শিক্ষার্থীর ইয়ার গ্যাপের অনেক কারণ থাকতে পারে। গুরুতর অসুস্থতা, বড় কোনো অস্ত্রোপচার, মা-বাবা বা পরিবারের কোনো সদস্য মারা যাওয়া বা অন্য যেকোনো কারণে কেউ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার একটি বিষয়ের পরীক্ষা না দিতে পারলে তার গ্যাপ হয়ে যায়।
দেশের স্বাস্থ্যখাত ধ্বংসকারী, স্বৈরাচারের দোসর ও স্বাস্থ্যখাতে সিন্ডিকেটের মূল হোতা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেকের এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে অনেক মেধাবী স্টুডেন্ট যারা হয়তো কোন কারণে প্রথম বার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে পারে নি পরবর্তীতে তারা আবার ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা দিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চেয়েছে কিন্তু তাদের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয় নি। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, দেশে প্রতিবছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলেও, এক বছরের জন্য অনিয়মিত হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। এরা যোগ্যতার অন্যান্য শর্ত পূরণ করছে। দেশের সকল সরকারি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজসহ বিদেশে পড়তে হলে দেশের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। কিন্তু যারা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এক বছরের জন্য অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে, তারা এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় সব শিক্ষার্থীই চিকিৎসক হওয়ার সপ্ন দেখে। আর এজন্য সবাই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। কিন্তু এসব খুটিনাটি অযৌক্তিক বিষয়ের জন্য অনেকের মেডিকেলে পড়ার সপ্ন শেষ হয়ে যায়। একটি সার্কুলার প্রণয়নের ক্ষেত্রে সব বিষয়াদি নজরে রাখা উচিত। মেডিকেলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষায় পাস না করলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। তাই যেখানে শুধু একবছর বেশি গ্যাপ থাকলে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যায় না। এক বছর অতিরিক্ত বিরতি থাকা কখনই কোনও শিক্ষার্থীর অযোগ্যতা হতে পারে না। নিয়মিত ও অনিয়মিতদের মধ্যে এই বৈষম্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।