অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা জানতে আইনি নোটিশ

অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ
অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা জানতে ও পুরো বক্তব্য প্রকাশের জন্য আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ।

আজ মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, অনলাইন পোর্টাল বি বার্তা ২৪ এর সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেল বরাবর এই নোটিশ পাঠানো হয়।

অধ্যাপক রহমত উল্লাহর পক্ষে এই নোটিশ পাঠান ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো. আমিনুল গণী টিটো। আগামী তিনদিনের মধ্যে অধ্যাপক রহমত উল্লাহর সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ করে তার আলোকে তাদের (অধ্যাপক সামাদ,হাসি, রাসেল) প্রচারিত প্রকাশিত অভিযোগের সত্যতা প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় অধ্যাপক রহমত উল্লাহ আইনের আশ্রয় গ্রহন করতে বাধ্য হবেন বলে নোটিশে বলা হয়।

নোটিশে বলা হয়, ১৭ এপ্রিল সকাল ১১ টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত “ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস" আলোচনা সভা যার সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। উক্ত আলোচনা সভায় আমার মোয়াক্কেল (অধ্যাপক রহমত উল্লাহ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসাবে মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন এই সরকারের কর্মপরিচালনা এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ে আলোচনা করেন।

আরও পড়ুন: র‌্যাগ ডে নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ধরনের প্রভাব ফেলবে

এতে আরো বলা হয়, আলোচনায় উক্ত মুজিবনগর সরকারেকে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হয়েছিলেন তা উল্লেখ করেন এবং মুজিবনগর সরকারের অন্যতম জাতীয় চার নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত কুলাঙ্গার এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তীকালে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি তার ব্যক্তিগত ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমার মোয়াক্কেল মূলত ১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস শীর্ষক আলোচনায় উক্ত জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এর সঙ্গে খন্দকার মোশতাক আহমেদকে কুলাঙ্গার হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেন।

নোটিশে অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, আপনি উক্ত বক্তব্যের প্রকৃত সত্য জেনেও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার মোয়াক্কেলের সম্মান কলংকিত করার হীন উদ্দেশ্যে প্রকৃত সত্য গোপন করে মনগড়াভাবে বক্তব্য সাজিয়ে আপনার বক্তব্য আমার মোয়াক্কেল খন্দকার মোশতাক আহমেদকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মর্মে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে প্রতিবাদের নামে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন এবং আপনার বক্তব্যের মাধ্যমে উক্ত আলোচনা সভার সভাপতিকে প্রভাবিত করেন।

তথ্যসূত্র ছাড়াই অধ্যাপক রহমত উল্লাহর দেয়া প্রকৃত সত্য গোপন করে তাঁর অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে আমার মোয়াক্কেলের বক্তব্যের প্রকৃত সত্য গোপন করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আপনার মনগড়া বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর মিথ্যা কুৎসা বক্তব্য অনলাইন পত্রিকায় (বি বার্তা ২৪) তথ্যসূত্র উল্লেখ না করে প্রচার ও প্রকাশ করে আমার মোয়াক্কেলের ব্যক্তিগত, পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানকে কালিমা লেপন করে, সম্মান ক্ষুন্নসহ অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছেন।

এতে অনলাইন পোর্টাল বি বার্তা ২৪ এর সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেলের উদ্দেশ্যে বলা হয়, ২নং নোটিশ গ্রহীতা ( বাণী ইয়াসমিন হাসি) সম্পূর্ণ বক্তব্য উল্লেখ না করে ১নং নোটিশ গ্রহীতা (অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ) আপনার সরবরাহকৃত ভ্রান্ত খণ্ডিত কথিত বক্তব্যের নামে অসত্য বক্তব্য ‘‘খুনি মোশতাকের প্রতি ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতির শ্রদ্ধা!’’ শিরোনামে ৩নং নোটিশ গ্রহীতা মহিউদ্দিন রাসেল (বি বার্তা প্রতিবেদক) এর প্রতিবেদন ওই দিন রাত ৯ টা ১৩ মিনিটে প্রচার ও প্রকাশ করে সত্যকে আড়াল করে আমার মোয়াক্কেলের ব্যক্তিগত পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান এবং ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছেন।

আরও পড়ুন: ঢাবির কোন ইউনিটে কত আবেদন পড়ল?

প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অন্য মন্ত্রীদের পাশাপাশি তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোশতাকের অবদা‌নের কথা উল্লেখ ক‌রে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ। পরদিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরে ক্ষমা চান রহমত উল্লাহ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence