ঢাবি সুইমিং পুল

ঢাকায় সাঁতার শেখার সেরা স্থান

ঢাবির সুইমিং পুল
ঢাবির সুইমিং পুল  © টিডিসি ফটো

সুস্থ জীবনের জন্য শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, দেহ-মন-ও মস্তিষ্ককে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে শরীর চর্চার বিকল্প নেই। আর সাঁতার হলো সেই শরীরচর্চার মধ্যে সবচেয়ে সেরা চর্চা।

কিন্তু রাজধানী ঢাকায় দু’হাত মেলে সাঁতারের জায়গা হাতেগোনা। তার মধ্যে সাঁতারের সেরা স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শরীর চর্চা কেন্দ্রের সুইমিং পুল। দুইটি আলাদা পুলে প্রতিদিন ছিমছাম মনোরম পরিবেশে সাঁতার কাটেন, শেখান ও শেখেন আগ্রহীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা ছাড়াও বাহিরের অনেকের সাঁতারের প্রিয় স্থান এটি।

আরও পড়ুন: দুই বছর ধরে অচল ডাকসুর সিসি ক্যামেরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি শরীর চর্চা করার উদ্দেশ্যে ১৯২৫ সালে স্থাপন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত ব্যায়ামানুশীলন, কোচিং, টুর্নামেন্ট, গেমস এবং স্পোর্টসের ব্যবস্থা করা হয়।

নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বন্ধ থাকে এটির কার্যক্রম (টিডিসি ফটো)

বিশেষ করে আন্তঃবিভাগ, আন্তঃহল, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়াও এখানে জুডো, কারাতে, ইয়োগা, ব্যায়াম এবং সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও রয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটা হল শরীর চর্চার অন্যতম জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সুইমিং পুল আশির দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকার শুরুর দিকের সুইমিংপুলগুলোর মধ্যে এটি একটি।

আন্তঃহল সাঁতার প্রতিযোগিতা (ফাইল ফটো) 

সুইমিংপুলটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা এমনকি বহিরাগতসহ সকলেই নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে ও প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতিসমূহ মেনে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিতে পারেন এবং সাঁতার কাটতে পারেন। এক্ষেত্রে শেখার জন্য বহিরাগতরা ২ হাজার ১০ টাকা দিয়ে ৪৫ মিনিট করে মাসে ১৬টি ক্লাস করতে পারে। আবার দ্বিতীয় মাসে অনুশীলন করতে চাইলে নবায়ন ফি বাবদ এক হাজার টাকা দিতে হয়। এখানকার শিক্ষার্থীরা ১০০ টাকা দিয়ে সপ্তাহে দুটো করে ক্লাস করতে পারে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হচ্ছে না

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুইমিংপুলের সদস্য হতে লাগে ২৬০ টাকা। আর বিকালের শিফটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মকর্তাদের জন্য বাৎসরিক সদস্য ফি ১০০০ টাকা এবং ৬ মাসের জন্য ৭০০ টাকা। তবে এসোসিয়েট (বহিরাগত) সদস্যদের বাৎসরিক ফি ১২ হাজার টাকা এবং ৬ মাসের জন্য ৮০০০ টাকা করে নির্ধারিত। তবে বহিরাগতের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষক বা কর্মর্তার সুপারিশ থাকতে হবে। উল্লেখ্য যে, এখানে ভর্তি হওয়া যায় সাত বছর বয়স থেকে, কিন্তু প্রশিক্ষণার্থীকে অবশ্যই লম্বায় কমপক্ষে চার ফুট হতে হয়। আর প্রতি বৃহস্পতিবার সুইমিং পুল বন্ধ থাকে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে হিন্দু ছাত্রীদের জন্য আলাদা মন্দির হচ্ছে

বর্তমানে সুইমিংপুল কমপ্লেক্সের সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে। এটি মূলত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বন্ধ হয়ে যায়। কারণ এসময় শীতকাল থাকাতে কেউ সাতার কাটতে আসেনা। এজন্য ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের পর সদস্য আহবানপূর্বক ভর্তির কাজ শেষ করে মার্চের শুরুতে সুইমিংপুলের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে শরীরচর্চা কেন্দ্র অফিস।

তাছাড়াও কমপ্লেক্সের কিছু নতুন দরজা লাগানো, লাইটিং, নিরাপত্তাজনিত কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নতুন টাইলস লাগানোসহ বেশকিছু সংস্কার কাজও এই ছুটির মধ্যে সম্পন্ন করছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাবি সুইমিং পুল (ফাইল ফটো)

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর কিছুদিন শিক্ষকদের একটি অংশ পুলটি নিয়মিত ব্যবহার করতেন। পরে কয়েক বছর ব্যবহার কমে গিয়েছিল। ২০০০ সালের আগে এ সুইমিংপুল খুব বেশি ব্যবহৃত হতো না। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিভিন্ন ইভেন্ট বা খেলাধুলার সময় সীমিত পরিসরেই মাঝেমধ্যে ব্যবহৃত হত। বেশিরভাগ সময়ই ময়লা-আবর্জনা জমে ব্যবহার অনুপযোগী থাকতো।

২০০০ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সুইমিংপুলকে ঘিরে বেশকিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নেয় এবং ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তুলে। একে রূপ দেয় ঢাকা শহরের অন্যতম এক অত্যাধুনিক সুইমিংপুল হিসেবে। তখন থেকে মূলত এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকে। দিন দিন সকলেরই সাঁতার কাটার এক আকর্ষণীয় কেন্দ্রে পরিণত হতে থাকে এটি।

আরও পড়ুন: ট্রেনে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন ঢাবি ছাত্র

সুইমিংপুলের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. শাহজাহান আলী বলেন, সাঁতার শেখা বা সাঁতার কাটা জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ প্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র এই সুইমিং পুলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাসহ নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের লোকদেরকে সাঁতার কাটা ও শেখার সুযোগ প্রদান করে থাকে।

“আমরা এক্ষেত্রে সকলকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করি। ভবিষ্যতেও আমাদের এ সেবাকে আরও ত্বরান্বিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যাতে আমাদের এ সুইমিং পুল থেকে বিরাট একটি অংশ উপকৃত হন এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে সক্ষম হন।”


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence