স্মরণে টিএসসিতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল
দেখা হলেই সালাম দিতো আর মাঝেমধ্যে ইংরেজিতেও কথা বলতো ‘খোকন মামা’
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:৪০ PM , আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:৪০ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সদ্য প্রয়াত কর্মচারী মো. শাহ আলম খোকনসহ যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। টিএসসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে টিএসসিতে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন টিএসসির পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর, উপ-পরিচালক ফারজানা বাশার, নজির আহমদ সিমা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ফয়জুল আলম পাপ্পু, বাংলা একাডেমির শাহাদাৎ হোসেন নিপু, ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভির হাসান সৈকত প্রমুখ। এসময় মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ উদ্দিন।
টিএসসির পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর বলেন, তিনি একজন সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। সবাই তার প্রতি এতো সহনশীল ছিল যে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তার আচরণে আমরা সবাই মুগ্ধ ছিলাম। কারও সাথে দেখা হলেই সে আগে সালাম দিতো। মাঝেমধ্যে ইংরেজিতে কথা বলতো। সবার সাথে তার একটা সুসম্পর্ক ছিল। কারও সাথে কোন প্রকার ঝগড়া বা কোন প্রকার কটু কথা বলতে দেখি নাই। তিনি এই ধরনের একজন কর্মচারী ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, তার পরিবারে চারজন মেয়ে ও একজন ছেলে। আমরা ভাবতেছি তাদের জন্য কিছু করা যায় কিনা। যত দ্রুত সম্ভব তার দেনা পাওনা পরিশোধ করা যায় সেই বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি। পরিশেষে, আমরা সবাই তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করে টিএসসির পক্ষ থেকে আমরা এই কামনা করি।
ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, খোকন মামার কাছ থেকে কেউ কখনও খারাপ ব্যবহার পায়নি। হোক সে বর্তমান কিংবা সাবেক শিক্ষার্থী। আমি নিয়মিত তার সাথে আড্ডা দিতাম। আড্ডা দেওয়ার সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি মরে গেলে আপনারা আমাকে কি মনে রাখবেন। আমি তখন তাকে বলেছিলাম যে আপনাকে ভুলে যাওয়া অসম্ভব। আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন খোকন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরদিন শুক্রবার সকালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের নিজ এলাকায় তাকে দাফন করা হয়।
টিএসসিতে তিনি পরিচিত খোকন মামা নামে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের দেখলেই মুহুর্তেই গল্প জুড়ে দিতেন তিনি। পরিচিত শিক্ষার্থীদের দেখলে বলে উঠতেন, ‘আন্নে জানেন না, আন্নেগোরে আই বহুত ভালোবাসি।’ এমন ভালোবাসা মাখানো শব্দে আর মায়ায় কথা বলতেন খোকন মামা। সেই খোকন মামা না ফেরার দেশে চলে গেলেন৷