চবি’র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার নিয়ে নানা অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
- জানে আলম, চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০৫:১৩ PM , আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০৫:২৬ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারকে জ্ঞান চর্চার উপর্যুক্ত সুযোগ সুবিধা তৈরি করা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন দাবিদাওয়া প্রকাশ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। গ্রন্থাগারে প্রয়োজনীয় বই না পাওয়া, ব্যক্তিগত বই পাঠের সু-ব্যবস্থা না থাকা, ওয়াইফাই না থাকা, বই ইস্যু করতে না পারা, প্রতিবন্ধীদের পড়ার সু-ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে অভিযোগ তুলেছে শিক্ষার্থীরা। ২১ নভেম্বর সকালে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
বিষয়টি নিয়ে চবি'র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক এ.কে. এম মাহফুজুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গ্রন্থাগার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের কাজ করতে হয়। সিন্ডিকেটের অনুমোদিত সিদ্ধান্ত দ্বারা আমরা আবদ্ধ বিদায় আমরা কাউকে বই নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারি না।
বর্তমানে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রন্থাগারে ওয়াই ফাই সুবিধার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি বলেন, পূর্বে গ্রন্থাগারে ওয়াই-ফাই ছিল। তখন গ্রন্থাগারের গেইটে এবং বাহিরে সবসময় ভীড় থাকতো। শিক্ষার্থীরা ফেইসবুক ব্যবহার করার জন্য গ্রন্থাগারের সামনে চলে আসতো। তাই ওয়াই-ফাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওয়াই-ফাই না থাকায় বিভিন্ন অসুবিধে নিয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুদ্দিন শহীদ বলেন, বইয়ের ডাক নম্বর বাহির করতে সমস্যা হয়। বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন এডুকেটিব ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে সমস্যা হয়। বেশিরভাগ গবেষণাপত্র গুগল সার্চ এবং রিসার্স ওয়েবসাইটে থাকে। সেগুলো পড়তে সমস্যা হয়।
এছাড়াও তিনি বলেন, সীমাবদ্ধতার ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী লাইব্রেরি বিমুখ হচ্ছে। লাইব্রেরিতে অনেক প্রয়োজনীয় বই পাওয়া যায় না, এদিকে ব্যক্তিগত বই নিয়েও প্রবেশ করতে দেয় না। ফলে শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি মুখী হচ্ছে না। আমাদের একাডেমিক পড়াশুনায় করতে বিঘ্ন ঘটে। এর ফলে লাইব্রেরির প্রকৃত রূপ ফুটে উঠছে না যা অবাধ জ্ঞানচর্চায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
ক্রিমিনোলোজি এবং পুলিশ সাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈমুল আলম ব্যক্তিগত বই এবং শনিবারে গ্রন্থাগার খোলা রাখা নিয়ে বলেন, বেশিরভাগ মেসে বা কটেজগুলোতে পড়ার পর্যাপ্ত পরিবেশ নেই, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে প্রয়োজনীয় সব বই পাওয়া যায় না, তাই শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বই নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ব্যক্তিগত বই নেওয়ার অনুমতি না দেওয়াতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
শনিবারে ক্লাস বন্ধ থাকলেও পড়াশোনা থেমে থাকে না, বরং ছুটিতে শিক্ষার্থীরা পুরোদিন পছন্দের বই পড়ার সুযোগ পায়। এছাড়াও অনেকে গবেষণামূলক বই বা রেফারেন্স বই পড়ে। কিন্তু শনিবার গ্রন্থাগার বন্ধ রেখে সেই সুযোগটাও বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রন্থাগারে পড়তে পারা শিক্ষার্থীদের একটি অধিকার। গ্রন্থাগার বন্ধ রেখে সেই অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। শনিবার বন্ধ থাকাতে কটেজের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফলপ্রসূ সময় ব্যয় করতে পারছে না। এমতাবস্থায় শনিবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা রাখা একটি যৌক্তিক ও সময়ের দাবি।
প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবিই যৌক্তিক। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত দাবিগুলো বাস্তবায়নের ব্যাবস্থা করবো