চবির ১০১ শিক্ষকের বিবৃতি
‘দেশপ্রেমিক জনতা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজনের কূটচাল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে’
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৮ PM , আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৭ PM
ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ট্যাগ লাগানোর ‘অশুভ রাজনীতি’র তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের (চবি) ১০১ জন শিক্ষক। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ১০১ শিক্ষকের স্বাক্ষর সংবলিত গণমাধ্যম পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়। জনগণ এ ধরনের রাজনৈতিক কূটচাল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের বদলে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলের নামে যে প্রচার চলছে, তা ইতিহাস বিকৃতির নামান্তর বলে মনে করেন চবির ১০১ জন শিক্ষক। অতীতের ফ্যাসিবাদী একাধিপত্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত বিবরণ আড়াল করা হয়েছে। বর্তমানেও ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণ করে কোনো কোনো গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ ট্যাগ লাগানোর অশুভ রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশে দেশপ্রেমিক জনতা বিভাজনের এই রাজনৈতিক কূটচাল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ ট্যাগ লাগানোর অশুভ রাজনীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এতে আরও বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের দেওয়া বক্তব্যের কিছু অংশ খণ্ডিতভাবে প্রচার করে একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। যদিও চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অবমাননা হয় এমন কোনো কথা বলেননি; বরং হত্যার প্রকৃতি ও পরিকল্পনা নিয়ে আরও প্রামাণ্য গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। কারণ, ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পাকিস্তানী বাহিনী তখন পলায়নরত অবস্থায় ছিল। পরবর্তীতে মিত্র বাহিনীর নাম ধারণ করে ভারতীয় বাহিনী যে অবাধ লুটতরাজ করেছে, যার প্রতিবাদ করেন মেজর আ. জলিল সহ দেশপ্রেমিক মুক্তিযুদ্ধাগণ। জহির রায়হানসহ অনেক বুদ্ধিজীবী হত্যার দায় তখনকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপর ছিল। অতএব, বিজয়ের প্রাক্কালে বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রকৃত কারণ এবং এর নেপথ্যের হত্যাকারী চক্রকে একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে উন্মোচিত করা দরকার।
বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, যারা সত্যাসন্ধানী ইতিহাসচর্চার মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনাটি অনুসন্ধানের বদলে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ স্লোগান তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের এজেন্ট এবং বিতাড়িত আওয়ামী-বাকশালী ফ্যাসিবাদের অনুচর। জুলাই বিপ্লবের রক্তমাখা চেতনায় দেশপ্রেমিক ইসলামী মূল্যে বোধে বিশ্বাসী জাতীয়তাবাদী ছাত্র-জনতা এইসব দেশবিরোধী, গণতন্ত্র হত্যাকারী, ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করা ও বিভাজন সৃষ্টিকারী অপশক্তির প্রেতাত্মাদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা শিক্ষকরা হলেন— ফাইন্যান্স বিভাগের প্রফেসর ড. ইসমত আরা হক, প্রফেসর ড. শাহাদাত হোছাইন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী, প্রফেসর ড. নেছারুল করিম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. রেজাউল আজিম, ড. মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রফেসর ড. আরিফুল হক সিদ্দিকী, প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, ড. শামীমা নাসরিন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. মো. শহীদুল হক, ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, প্রফেসর ড. আবুস সাদাত মুহাম্মদ আবদুল মান্নান চৌধুরী, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস, প্রফেসর ড. আ.ক.ম. আবদুল কাদের, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাযায়াত উল্লাহ ফারুকী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, প্রফেসর ড. হারিসুর রহমান হাওলাদার, রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন, প্রফেসর ড. মো. মোশারেফ হোসেন ভূঁইয়া, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, প্রফেসর ড. এম. শামছু উদ্দিন আহমদ, ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান, পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর মো. ইমাম হোসেন, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, প্রফেসর মো. রোকনুজ্জামান আজাদ, প্রফেসর মো. সাখাওয়াত হোসেন, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস-এর প্রফেসর ড. বায়েজিদ মাহমুদ খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, প্রফেসর ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুল হুদা, প্রফেসর ড. মো. আকতার হোসেন, ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবদুল্লাহ আল মাসুম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসাইন, প্রফেসর জনাব শাহ আলম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী আশরাফউজ্জামান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ অছিয়র রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সানাউল্লাহ চৌধুরী, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ রোকন উদ্দীন ফারুকী, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. ইকবাল সরোয়ার, প্রফেসর ড. কাজী মো. বরকত আলী, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ, প্রফেসর সালমা মমতাজ, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ, দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান, প্রফেসর মোজাম্মেল হক, প্রফেসর ড. মো. কোরবান আলী, প্রফেসর ড. শিরিন আকতার, প্রফেসর সামসুন নাহার মিতুল, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. বজলুর রহমান, প্রফেসর ড. মীর হোসেন সোহেল, প্রফেসর ড. মুহম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. ফুয়াদ হাসান।
এ ছড়া ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন ভূঞা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এনামুল হক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন কাদেরী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. আহমদ আলী, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের জনাব রুমানা আকতার, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. ইকবাল হোসাইন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের জনাব মুহাম্মদ শফিউর রহমান চৌধুরী, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. লুলু ওয়াল মরজান, প্রফেসর ড. এস. এম. রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড. এ এম আবু আহমেদ, গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. এইস.এস. ফারুক আলম, প্রফেসর মো. আবদুল আলীম, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফোরকান, ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. মোসলেম উদ্দিন, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস-এর প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান চৌধুরী, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস-এর প্রফেসর ড. শেখ আফতাব উদ্দিন, ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, ড. মুহম্মদ শাহেদ রাজন, হাসান মো. রাফি, মো. মফিদুর রহমান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. গোলাম কিবরয়া, প্রফেসর তানজিয়া শরমিন, প্রফেসর শের মাহমুদ, প্রফেসর ড. মো. আলমগীর, মো. এনামুল হক, অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তাছলিম উদ্দিন, প্রফেসর মোহাম্মদ মোর্শেদুল হক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. ওয়াহহিদা সুমি, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফজলুল কাদের, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. হাসান খালেদ রউফ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ড. মুমিন, এম এ হাবিব সিয়াম, প্রফেসর ড. মোসাম্মৎ রাশেদা চৌধুরী, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ইব্রাহিম হোসেন, প্রফেসর ড. ফারাজানা ইয়াসমিন চৌধুরী, মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. নুরুল ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ড. রুমানা আক্তার, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এনএম সাজ্জাদুল হক, ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের মুহাম্মদ ইলিয়াছ, লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমদ, ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রোকন উদ্দীন এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের মো. নূর নবী ও মো. ইউসুফ এতে স্বাক্ষর করেছেন।